চবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ মে ২০২৪, ১০:৫৫ PM , আপডেট: ০২ মে ২০২৪, ০৭:৩৬ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক সমাজ (হলুদ দল)-র প্যানেলের প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। এবার বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দল অংশ নেয়নি। ফলে হলুদ দল এবং হলুদ দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া বিদ্রোহী গ্রুপ ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের অনুসারী গ্রুপের নির্বাচনী জোট নির্বাচনে অংশ নেয়।
এতে ভরাডুবি হয়েছে অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের অনুসারী গ্রুপ ও বিদ্রোহী গ্রুপের নির্বাচনী জোট প্যানেলের। ১১টি পদের মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৮টিতেই জয় পেয়েছে মূল হলুদ দলের প্যানেলের প্রার্থীরা। আর সাবেক অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের অনুসারী ও বিদ্রোহী গ্রুপের নির্বাচনী জোট মাত্র তিনটি সদস্য পদে জয় পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। মোট ৯৪২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭৮২ জন।
এবারের নির্বাচনে শিক্ষক সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ৫টি পদেই জয় লাভ করেছে হলুদ দলের প্রার্থীরা। হলুদ দল থেকে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি পদে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ পদে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগের অধ্যাপক শাহনেওয়াজ মাহমুদ সোহেল, সাধারণ সম্পাদক পদে আইন বিভাগের অধ্যাপক এ. বি. এম. আবু নোমান, যুগ্ম সম্পাদক ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম।
এছাড়া সদস্য পদে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মনজুরুল আলম, ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ উদ নবী ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এস. এম বোরহান উদ্দিন হলুদ দলের পক্ষে জয়ী হয়েছে।
অপরদিকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের অনুসারী ও বিদ্রোহী গ্রুপ বাকি ৩টি সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস.এম. মনিরুল হাসান, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রেজাউর রহমান ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস. এম. সাদাত আল সজীব।
সদ্য বিজয়ী চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচনে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলুদ দল হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন করেছে। কেন পরিচয় দিচ্ছে জানি না। এ বিষয়ে তারাই ব্যাখ্যা দিতে পারবেন, তবে আমরা যে প্যানেলে আছি এটাই মূলত হলুদ দল। এখান থেকে আমরা ৮ জন নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের হলুদ দলের বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে আপনার পরিকল্পনা কি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষক সমিতির কিছু রুটিন ওয়ার্ক থাকে। আমরা সেগুলো তো করবোই এছাড়া আরো কিছু বিষয় আছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহায়তা করা বা প্রশাসনের কাজে যদি নিয়মের ব্যত্যয় হয়ে থাকে সেগুলো তুলে ধরা যা শিক্ষক সমিতি সব সময় করে আসছে। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন নিয়মের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে এবং যোগ্য ব্যক্তিদের যোগ্য স্থানে আসীন করেন।
সদ্য বিজয়ী চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ. বি. এম. আবু নোমান বলেন, শিক্ষকদের অধিকার ও সম্মান রক্ষায় হবে আমাদের প্রথম কাজ। শিক্ষকদের সকল ধরনের সমস্যা সমাধানে শিক্ষক সমিতি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগামী রবিবার (৫ মে) থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবো। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম মিটিংয়ে আমরা আমাদের প্ল্যান অফ অ্যাকশন ঠিক করব।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক সমাজের প্যানেল হলুদ দলের জয়ের ব্যাপারে দলটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করা সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে হলুদ দলের মূল প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ফলে এই দলের প্রতি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক সংবাদ। অতীতের ন্যায় আগামীতেও হলুদ দল শিক্ষক সমাজের পাশে থাকবে এবং যেকোনো দাবি আদায়ে সোচ্চার থাকবে।