শিক্ষক সমিতি নির্বাচন

৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় আওয়ামীপন্থীদের

৮৯% বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতবিহীন জয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের
৮৯% বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতবিহীন জয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের  © টিডিসি ফটো

চলতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সরকার দলীয় শিক্ষকদের প্যানেল ছাড়া অংশগ্রহণ করেনি অন্যকোন দল। ফলে বিরোধী মতবিহীন নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষকরা। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, শিক্ষক রাজনীতি সক্রিয় রয়েছে দেশের এমন ৩৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রও একই।

দেশের এসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের সংস্কৃতি হারিয়েছে অনেক আগেই। শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে ‘নির্বাচন সংস্কৃতি’ চালু ছিল। কিন্তু সেই শিক্ষক সমিতির নির্বাচনও হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে জাতীয় নির্বাচনের মতো বিরোধী মতবিহীন নির্বাচনের হিড়িক লেগেছে উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ভিন্নমত চর্চার সবচেয়ে উর্বর জায়গা মনে করা হলেও দেশে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কমে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার সিঁড়ি ঢাবি শিক্ষক সমিতি

সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, গত এক যুগ ধরে শিক্ষক নিয়োগে অতিমাত্রায় রাজনীতিকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যাওয়ার জন্য রাজনীতির ব্যবহার, ভিন্নমতদের শিক্ষক নিয়োগে বাধা দেওয়ার কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্নমতের শিক্ষকরা প্যানেল দাঁড় করানোর সক্ষমতা হারিয়েছে। এভাবে ভিন্নমতকে পাশ কাটিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনকে দেশের জন্য বড় অশনিসংকেত বলে মনে করছেন তারা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিতে মোটা দাগে দুই থেকে তিনটি প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা যায়। এর মধ্যে-আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা নীল কিংবা হলুদ এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা সাদা, শাপলা কিংবা সোনালী আর বামপন্থী শিক্ষকরা গোলাপী প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধুর চেতনা কিংবা প্রগ্রতিশীল—নামেও আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা আলাদা প্যানেল দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন: ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হলেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানা যায়, দেশে মোট ৫৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি। বাকিগুলোর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে এমন ৩৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২টিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অথবা নিজেদের মধ্যে দুটি প্যানেলে ভাগ হয়ে নির্বাচন আয়োজন করতে দেখা গেছে। সে হিসেবে, প্রায় ৮৯ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতবিহীন শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনের তথ্য বিশ্লেষণ করে তথ্যটি উঠে এসেছে।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রায় ১৫ বছরে দেশে ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১টিতে শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়নি এখনো। বাকি ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধীমতের কোনো শিক্ষক সংগঠন নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগে দল বিবেচনায় করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, যেই রাজনৈতিক দল কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় থাকবে সেই দলের অনুগত শিক্ষকরাই হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বেসর্বা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে থাকবেন তারা। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে হল প্রাধ্যক্ষ, হাউজ টিউটর পর্যন্ত তাদেরই আধিপত্য থাকে।

আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি লাইনেই ভুল

শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনের তথ্য মতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শিক্ষক সমিতি নির্বাচিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল— চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‍কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। 

আওয়ামী লীগপন্থী প্যানেলের সঙ্গে বিএনপির শিক্ষকদের প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। 

রাজনীতি নেই বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অন্যতম বড় একটি নির্বাচন হলো শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। শিক্ষকদের দুইটি প্যানেল আওয়ামী লীগপন্থী নীল দল ও বিএনপিপন্থী সাদা দলের মাঝে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু যখন যেই রাজনৈতিক দল কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় থাকে তখন সেই রাজনৈতিক দলের অনুগত শিক্ষকরা এই সমিতির নেতৃত্বে থাকেন— এ ধারণাটি ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ২০২৪-২৫ কার্যকরী পরিষদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক ড. জিএম সাদিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক ড. মো. আরাফাত রহমান। আর মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে পুনরায় সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ড. মো. মাসুদার রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা সবাই আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপিপন্থী সাদা দলের সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এমন কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি যারা সাদা দলকে সমর্থন করছে। সবাইকে নীলদল করতে এক প্রকার বাধ্য করা হয়। এর ফলে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সাদা দলের চেয়ে নীল দলের ভোটার অনেক বেশি থাকে। নির্বাচনের সময় এমনও হয় যে, তার আগে অনেকেগুলো শিক্ষক নিয়োগ পায় এবং তারা কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদেরকে (নীল দল) ভোট দিতে বলা হয়।

নির্বাচন সম্পর্কে নীল দল থেকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সদস্য ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ভাবধারা বজায় রাখতে অবশ্যই সাদা দল এবং নীল দল উভয়েরই নির্বাচনে আসা উচিত। কিন্তু বর্তমানে যারা শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছে তারা ক্ষমতাসীন দলে এসেই বিভিন্ন কোরামে যোগ দিচ্ছে, আর রাজনীতি করছে নীল দলের সাথে। এখন সাদা দলের ভোটার অনেক কম ফলে নির্বাচন হলেও নীল দল অবশ্যই জিতবে। আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সাদা দল একই কাজ করবে। যার ফলে রাজনীতি আসলে ক্ষমতা কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অবশ্যই ভালো নয়।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে এবারের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইকবাল রউফ মামুন বলেন, এবার ভোটার সংখ্যা ছিল দুই হাজারেরও বেশি ছিল। কিন্তু সাদা দল নির্বাচনে না আসায় নীল দলের প্যানেল নির্বাচিত হয়ে গিয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমাকে কোনো কাজই করতে হয়নি।

ঢাবির নীল দলের আহবায়ক অধ্যাপক আব্দুস ছামাদ বলেন, সরকারের তো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে হয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয় চালানো মানে হচ্ছে, তাকে নেতৃত্বের গুণাবলি সম্পন্ন হতে হবে। আমাদের এখানে সমিতি যারা শীর্ষ পদে থাকেন তারা কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়ে আসেন। যেমন হলের হাউজ টিউটর থেকে শুরু করে প্রভোস্ট, সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, অনুষদের ডিন তারপর এসে সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়।

“একটি বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য প্রশাসনিক দক্ষতার একটি বিষয় থাকছে। এসব অভিজ্ঞতা না থাকলে কাউকে যদি হঠাৎ অ্যাকাডেমিক দিক থেকে খুবই সিনিয়র তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয় তিনি কিন্তু চালাতে পারবেন না।”

ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাদা দলের সাবেক আহবায়ক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে শিক্ষক সমিতি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ️ পদগুলোয় নিয়োগ পাচ্ছে সেটা সত্য। কিন্তু নিয়োগ পেয়ে তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে কিনা সেটিই প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপির আমলেও এমন নিয়োগের কিছু কিছু নজির ছিল কিন্তু তারা চেয়ারে বসে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক সুকুমল বড়ুয়া বলেন, এটাই সত্য যে, যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকারের নিয়ন্ত্রণে সবাকিছু থাকে। সেটাই স্বাভাবিক। 

বিএনপির আমলেও একই অবস্থা ছিল, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির সময় একটু অন্য ধরনের ছিল। কারণ তখন এসএমএ ফায়েজ স্যার (ঢাবির সাবেক উপাচার্য) ছিলেন। তখন নীল দল থেকে বিভিন্ন ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে যেতো তা তিনি পূরণ করতেন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য দিয়ে থাকতেন।

‘‘এখন শুধু শিক্ষকরা না, সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে আগের মতো অবস্থা এখন নেই। দিন দিন মানুষের নীতি-নৈতিকতা যেমন অধঃপতন হচ্ছে, সবকিছু মিলিয়ে কেমন সব জায়গায় একটি প্রশ্নবিদ্ধ তৈরি হচ্ছে। সেটি শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে সমাজের সব জায়গাতে। বর্তমানে সমাজের সামগ্রিক চিত্র হচ্ছে এটা। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও এদিক থেকে বাদ নয়।’’

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, বর্তমানে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ অবস্থানে যেতে চাই তারা ভীষণভাবে বাইরের রাজনৈতিক দল দ্বারা প্রভাবিত। তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের সাথে যুক্ত। আমি মনে করি, কিছু সুযোগ-সুবিধা লাভের জন্যই তারা এই দলীয় অবস্থান নেয়।

“যদি তারা সৎভাবে দল করতো তাহলেই রাজনৈতিক দলগুলো চরিত্র আরও উন্নত হতো এবং শিক্ষকদের ভূমিকাও সঠিক থাকতো। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা একবারে ভিন্ন। একসময় অধ্যাপক আহমেদ শরীফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। তিনি দল নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ অবস্থানে থেকে কথা বলতেন এবং কাজ করতেন। তিনিও শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এরকম কিছু পাওয়ার জন্য কখনো মাথা নত করেননি।”

তিনি আরও বলেন, এখন শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আসছে নির্বাচন হবে কিন্তু এই দলীয়করণটা থাকবে। দল করুক তাতে আপত্তির কিছু নেই কিন্তু দল করে দলের নেতৃত্ব এবং চিন্তাধারা সবার জন্য কাজ করে থাকলে তা হবে প্রশংসনীয়। কিন্তু বাস্তবতায় রাজনীতিবিদদের মধ্যে এরকম চিন্তা দুর্লভ। তবে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা উন্নত হোক, তাদের সফলতা হোক, সেটাই কামনা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence