বাবার পথেই ছেলে, মেহেদী এখন বিসিএস ক্যাডার

৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. মেহেদী হাসান
৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. মেহেদী হাসান  © সংগৃহীত

৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে (রসায়ন) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তিনি। ৪১তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন। তবে সেবার প্রিলিতেই বাদ পড়েছিলেন। অবশেষে ৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার হলেন তিনি।

মেহেদীর গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের উল্যা গ্রামে। বাবা মো. সাহাদৎ হোসেন। মা মমতাজ বেগম। বাবা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করছেন। মেহেদী তার মাধ্যমিক চাঁচড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চমাধ্যমিক ঝিনাইদহের সরকারি মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজ থেকে পাস করেন।

পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে ২০১৫ সালে ভর্তি হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন মেহেদী। ২০২০ সালে এসে বিসিএসের প্রস্তুতি নেন। প্রথমে ৪১তম বিসিএসে অংশগ্রহণ করেও সফল হননি। পরে ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

মেহেদী হাসান বলেন, আমার বাবা একটি  নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। আমি শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলাম সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে। অনুভূতি অবশ্যই অত্যন্ত আনন্দের। সবকিছুর জন্য মহান স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে ২০১৫ সালে ভর্তি হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন মেহেদী। ২০২০ সালে এসে বিসিএসের প্রস্তুতি নেন। প্রথমে ৪১তম বিসিএসে অংশগ্রহণ করেও সফল হননি। পরে ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

তিনি বলেন, বিসিএস সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই জানাশোনা। তবে বিসিএসের প্রতি স্বপ্ন বা ভাবনা শুরু হয় মূলত ২০১৯ সালে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার পর থেকে। আসলে আমাদের ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে প্রতি বিসিএসেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্যাডার হন। এ বিষয়টি বিসিএসের প্রতি বিশেষ অনুরাগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে।

বিসিএসের প্রস্তুতির বিষয়ে মেহেদী বলেন, বিসিএসের জার্নি মূলত ২০২০ সালে শুরু হয়। করোনা মহামারিতে যখন জীবন স্থবির হয়ে যায়, তখন ঢাকায় থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান লাইব্রেরির বারান্দায় নিজস্ব চেয়ার টেবিলের মাধ্যমে পড়াশোনা শুরু করি। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক হলে লাইব্রেরিতেই নিয়মিত পড়াশোনা করেছি।

মেহেদীর ভাষ্য, ‘প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই বিসিএসের বিগত প্রশ্নগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ি। তারপর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেশি পড়েছি। প্রিলিমিনারির পূর্বে অনেক মডেল টেস্ট দিয়েছি। এতে আমার জন্য খুব উপকার হয়েছে।

সফলতার পেছনে কার ভুমিকা সব থেকে বেশি ছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্দার আড়ালে অনেকেই সাপোর্ট দিয়েছেন। বিশেষ করে আমার বাবা, যিনি প্রায় ২০ বছর একটি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। তিনি সবসময় আমাকে সফল হতে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

আরো পড়ুন: প্রত্যন্ত গ্রামে পড়াশোনা, প্রথম চেষ্টায় অ্যাডমিন ক্যাডার ডেন্টাল পড়ুয়া আজাদ

বিসিএস প্রত্যাশীরা কীভাবে প্রস্তুতি নেবে, জানতে চাইলে মেহেদী বলেন, নতুনদের জন্য আমার পরামর্শ হলো প্রথমে বিসিএসের পরিবর্তিত সিলেবাসটা গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। বিগত প্রশ্নগুলো ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে প্রস্তুতি শুরু করা উচিৎ। আর বর্তমানে পিএসসি যে প্যাটার্নে প্রশ্ন করছে, সেগুলো মাথায় রেখে নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঘটমান বিষয়গুলো ভালোভাবে জানতে হবে। 

তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন,  ২০৪১ সালের উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং রাষ্ট্র  বিনির্মাণে আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার চেষ্টা করব।


সর্বশেষ সংবাদ