সভাপতি-সম্পাদককে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্যের কারণেই বহিস্কার জারিন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ মে ২০১৯, ০৯:৫১ AM , আপডেট: ২১ মে ২০১৯, ১১:১৪ AM
‘রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী ভাই আপনাদের মধুভর্তি মেয়ে লাগে। বড় বড় প্রোগ্রামে মেয়েদের মুখ না দেখলে তো আপনাদের মন ভরতো না। শোভন ভাই আপনি একদিন আমাকে সবার সামনে বলছিলেন কী রে চেহারা সুন্দর আছে; তো সেজেগুজে আসতে পারো না!’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গত ১৩ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে হামলার শিকার হন ছাত্রলীগ নেত্রী জারিন দিয়া। হামলার পর এমনই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি আরো লিখেছিলেন, আমি সেজেগুজে আসতে পারি নাই দেখে আমাকে কমিটিতে রাখলেন না? আপনারা যেসব মেয়েকে কমিটিতে রেখেছেন তারা কয়দিন থেকে রাজনীতি করে! আপা কি জানেন? আর নিজে বিবাহিত বলে কমিটিতে দুনিয়ার বিবাহিত মেয়েদের রেখেছেন! আর গোলাম রাব্বানী ভাই আমাকে সবার সামনে বলছিলেন দু'দিনের মেয়ে কেমনে পোস্ট পাইছো বুঝি নাই!...........আজ তার শোধ নিলেন? অনেক তথ্য অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য। এই বিবাহিত বিতর্কিত কমিটি মানি না; মানবো না... আমার শ্রমের মূল্য দিতে হবে আপনাদের।’
ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদককে নিয়ে মন্তব্যকারী সেই দিয়াকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। সোমবার রাতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। দিয়া ছাড়াও ওই ঘটনায় আরো ৪জন বহিস্কৃত হয়েছেন। কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে অপর দু’জনকে।
দিয়ার বন্ধু ছাত্রলীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিতর্কিত কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জারিনা। অথচ উল্টো তাকেই বহিস্কার করা হলো! এটা শীর্ষ নেতাদের ব্যক্তিগত ক্ষোভ ছাড়া কিছুই নয়। বহিস্কারের পেছনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে দেওয়া স্ট্যাটাসকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।
এদিকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত হওয়ার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জারিন দিয়া। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জারিন দিয়া নামের এক ছাত্রী ঘুমের ঔষুধ খেয়ে হাসপাতালে আসেন। পরে তাকে স্টমাক ওয়াস দিয়ে ৫০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।ঘুরের ঔষুধ সেবন আত্মহত্যা চেষ্টার বিষয়টি জারিনের বন্ধুরা নিশ্চিত করেছেন।
তথ্যমতে, ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের এক বছর পর গত ১৩ মে ঘোষণা করা হয় সংগঠনের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০-১২ জন আহত হন। সেই ঘটনা তদন্তে ১৪ মে তিন সদস্যের কমিটি করে ছাত্রলীগ। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সেই কমিটি গত শনিবার রাতে প্রতিবেদন জমা দেয়। তার ভিত্তিতেই বহিস্কারের সিদ্ধান্ত এসেছে।