শিক্ষাঙ্গনে ‘নো হার্ম প্রিন্সিপল’ পলিসি নির্ধারণ করেছে ছাত্রদল: নাছির

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির  © টিডিসি ফটো

‘শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে ছাত্র রাজনীতি করা যায় তার একটি রোডম্যাপ তৈরি করবে ছাত্রদল। প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে ‘নো হার্ম প্রিন্সিপল’ পলিসি নির্ধারণ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।’ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমন কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

এসময় তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের দুই হাজারেরও অধিক ছাত্রজনতা খুনি হাসিনার নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে শহিদ হয়েছেন। এই অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি 'খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে' এই কথাটা বলতে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম এখনো ভয় পাচ্ছে অথবা লজ্জা পাচ্ছে। 

২৪'র গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের আহত-নিহতদের সংখ্যার বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অধিকারের জন্য দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে যে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে তা ত্বরান্বিত করতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের একশো'র বেশি নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন, দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, পাঁচ হাজারের অধিক নেতা-কর্মী খুনি হাসিনার মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন। বাংলাদেশের অন্য কোনো দল এখনো পর্যন্ত তাদের নেতাকর্মীদের শহিদ হওয়ার তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। 

ছাত্রদলের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী একটি মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিকে কীভাবে একটি অর্থবহ ও ইতিবাচক এবং কল্যাণমুখী ধারণায় অংশগ্রহণ করা যায় সেজন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক জনাব তারেক রহমান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। 

সে নিদর্শনের আলোকে আমাদের ৩৮টি টিম প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে অংশীদারত্বে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের দুই হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণে সচেষ্ট রয়েছে। 

ছাত্র রাজনীতির রোডম্যাপ নিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে ছাত্র রাজনীতি করা যায় তার একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে ‘নো হার্ম প্রিন্সিপল’ পলিসি নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি শিক্ষার্থীও যেন ছাত্রদলের রাজনীতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় তার জন্য মাননীয় উপাচার্য মহোদয়গণের সাথে কথা বলে কাজ করার জন্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব দূরীভূত করার জন্য ছাত্রদলের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা নির্দেশনা দিচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী শিক্ষাকে কীভাবে একটি আন্তর্জাতিক মানের উপযোগী করা যায় সেজন্য আমরা একটি পলিসি ডিসকাশনের আয়োজন করতে চাই। যেখানে বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবেন। 

এসময় রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহীর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রফিকুল ইসলাম, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহা. হাছানাত আলীসহ আরো অনেকে। 


সর্বশেষ সংবাদ