শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নতুন ৮ বার্তা কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ PM , আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৪ PM
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নতুন করে ৮টি বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এ বার্তাগুলো দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের নামে এ বার্তা জানানো হয়েছে। বিষয়টি জানতে নাহিদের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
নাহিদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের বলেন, নাহিদের সম্মতি নিয়েই বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে।
বার্তাতে যা বলা হয়েছে
বিবৃতিতে দেওয়া বার্তাগুলো হলো রংপুরের আবু সাঈদসহ নিহতদের স্মরণ করুন; তাঁদের কবর জিয়ারত করুন; পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান; হাসপাতালে থাকা আহতদের যথাসম্ভব সহযোগিতার চেষ্টা করুন; সক্ষমতা থাকলে নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করতে সহায়তা করুন; মর্যাদার সঙ্গে দাফন ও জানাজায় অংশ নিন; হতাহতদের তালিকা তৈরি ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন; হত্যা ও হামলায় সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করে রাখুন; যাঁরা যে স্থানে আন্দোলন করেছেন, নতুন করে সংগঠিত হন; নিরাপদে থাকুন, চিকিৎসা নিন ও গ্রেপ্তার এড়ান; ফেসবুকে ক্ষোভ না ঝেড়ে মাঠের প্রস্তুতি নিন; ইন্টারনেটনির্ভর না হয়ে বিকল্প কিছু পরিকল্পনা করুন; আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে দ্রুত সবার সঙ্গে যোগাযোগ করব; শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস ও হল খোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিন; শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং প্রবাসীরা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ক্র্যাকডাউন ও হত্যা-নিপীড়নের ঘটনা প্রচার করুন এবং দেশে আন্দোলনরত ছাত্র-নাগরিকদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ান।
‘ছাত্র-নাগরিক হত্যা ও গুম-খুনের বিচার, রাষ্ট্রীয় ক্ষয়ক্ষতির বিচার, মামলা প্রত্যাহার ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তি, আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং সব ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী রাজনীতির উৎখাত ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিচারের দাবিতে’ দফাভিত্তিক আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
এতে আরও বলা হয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কোটা সংস্কারের যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, সেটিকে তাঁরা চূড়ান্ত সমাধান মনে করছেন না। তাঁরা মনে করেন, যথাযথ সংলাপের পরিবেশ তৈরি করে নীতিনির্ধারণী জায়গায় সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। অংশীদারদের অংশগ্রহণে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে, যা কোটাপদ্ধতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও তদারক করবে। কোটার যেকোনো পরিবর্তন এই কমিশনের সুপারিশ সাপেক্ষে হতে হবে। এ ছাড়া সংসদে আইন পাসের বিষয়টি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তাই কোটা সমস্যার এখনো চূড়ান্ত সমাধান হয়নি। ২০১৮ সালেও আন্দোলনের চাপে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। ছয় বছর পরই সেটি বাতিল হয়। তাই এই পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপনের ‘খেলায়’ তাঁরা আর বিশ্বাস করেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর কেবল কোটা সংস্কারের বিষয়ে সীমাবদ্ধ নেই। তাই প্রজ্ঞাপন জারির সঙ্গেই এ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটবে না।