ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ‘ভাড়ায় খাটাচ্ছে’ ছাত্রলীগ

ভোটাধিকারের দাবিতে ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল
ভোটাধিকারের দাবিতে ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল  © টিডিসি ফটো

‘‘ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সামান্য হলের সিট সংকটকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচিতে ভাড়ায় খাটা কর্মীদের চেয়েও বাজেভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারছেন না। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডকে বাঁকা করে ফেলেছে।’’

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে ‘ভোটাধিকারের দাবিতে ছাত্র সমাজের’ ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শাহবাগে এসে কর্মসূচি শেষ করেন।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে জিততে চাই’ ‘সংগ্রাম সংগ্রাম, আপস নয় সংগ্রাম’ ‘দাবি মোদের একটাই, ভোটাধিকার ফেরত চাই’ ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ‘ভোট আমার অধিকার, এই অধিকার ফেরত চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে দেশের বিভিন্ন পাবলিক, জাতীয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন। এছাড়াও সমাবেশে বিভিন্ন লেখক, শিল্পী, শিক্ষকবৃন্দ ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত চার বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোন রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক যারা সাধারণ শিক্ষক থেকে উপাচার্য সবাই ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডগুলোকে আড়াল করে রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে তারা বলে ঢাবিতে নাকি কোনো গেস্টরুম গণরুম নেই। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলে দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নয়ন হচ্ছে।

‘‘এসব কথা বলে তারা শিক্ষার্থীদের দুর্নীতির দিকে উদ্বুদ্ধ করছে। সবসময়ই শিক্ষকরা ক্ষমতাসীনদের সাথে আপোষ করে শিক্ষার্থীদের দুর্নীতির শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডকে বাঁকা করে রেখেছে। দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নাকে ক্ষত দিয়ে দাস বানিয়ে রেখেছে।’’

বক্তারা আরও বলেন, ভোটাধিকার এখন প্রতিটি শিক্ষার্থী এবং প্রতিটি মানুষের মর্যাদার প্রতীক। আমরা ভোটাধিকার চাই। আমরা খাদিজার মুক্তি চাই। যে কোন অপরাধ না করেও দীর্ঘ একবছর ধরে শাস্তি ভোগ করছে। আজকে ক্যাম্পাসে আবরাররা যখন নির্যাতিত হয়, তখন ক্যাম্পাসের প্রশাসন, দেশের বিচারপতিরা নামমাত্র বিচার করেন।

সরকারের পতনের জন্য ঐক্য সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, হাজারো মানুষ আজ মিথ্যা মামলার শিকার। ৬০০-এর অধিক মানুষ আজ গুমের শিকার। ৯০-এর দশকে মাত্র একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য শিক্ষার্থীরা সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন করে এরশাদের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আজ প্রতিদিন একজন করে শিক্ষার্থী মারা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা ঐক্য গড়ে তুলতে পারছি না। এর কারণ হলো সব জায়গায় দখলদারিত্ব, ভয়, ত্রাস, দুঃশাসন সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।

তারা বলেন, আজকে যারা প্রধান বিরোধী দলে আছেন, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন—তাদের কাছে আমাদের দাবি আপনারা একটি লক্ষ্যে, এই সরকারের পদত্যাগের উদ্দেশ্যে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যান। একটি সুষ্ঠু নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

ভবিষ্যতের ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, যারা আগামীতে ক্ষমতায় আসবেন তাদের কাছে আমরা দাবি থাকবে, আপনাদের মাধ্যমে ছাত্রসমাজ যেনো নতুন স্বপ্ন দেখতে পারে। আপনাদের অঙ্গীকার করতে হবে আপনাদের দ্বারা শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকবে। শিক্ষার অধিকার রক্ষিত থাকবে। কোনো শিশু অর্থের অভাবে ঝরে পড়বে না। শিক্ষা নিয়ে কোন বাণিজ্য চলবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence