ঢাবিতে ছাত্রদল ঠেকাতে পাহারা, উপস্থিতি কম থাকায় হলের রুমে তালা ছাত্রলীগের

ঢাবিতে ছাত্রদল ঠেকাতে পাহারা, উপস্থিতি কম থাকায় হলের রুমে তালা ছাত্রলীগের
ঢাবিতে ছাত্রদল ঠেকাতে পাহারা, উপস্থিতি কম থাকায় হলের রুমে তালা ছাত্রলীগের  © টিডিসি ফটো

ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ ঠেকাতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মোড়ে মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাহারা বসিয়েছে ছাত্রলীগের নেতারা। আজ দ্বিতীয় দিনের এই কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কম অংশ নেওয়া এবং প্রোগ্রাম শেষ হবার আগেই অনেকে চলে আসায় তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে ওই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের চারটি রুম।  

আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে  হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানার নির্দেশে এসব রুমে তালা দেওয়া হয়। জানা যায়, এসব রুমে হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা থাকতেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ ঠেকানোর জন্য সকল প্রবেশপথে পাহারা বসায় ছাত্রলীগ। যেখানে জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের দায়িত্ব ছিলো ক্যাম্পাসের নীলক্ষেত গেট নিরাপদ রাখা। যাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এদিক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে৷ তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ওই হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৭টায় প্রোগ্রাম আহবান করে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেয়।

এদিকে, প্রোগ্রামের শুরুতেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম থাকায় বকাঝকা করেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন। পরবর্তীতে কিছু শিক্ষার্থী প্রোগ্রাম চলাকালে হলে চলে যান আবার কেউ কেউ ক্যাম্পাসে ঘুরতে চলে যায়। ফলে প্রোগ্রামস্থল অনেকটাই ফাকা হয়ে যায়। এতেই ক্ষুব্ধ হন সভাপতি রানা। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি হলের রুমগুলোতে তালা লাগানোর নির্দেশ দেন এবং একইসাথে ঘোষণা দেন যে, পরবর্তী প্রোগ্রামগুলোতে উপস্থিতি বেশি হলে রুমগুলো পুনরায় খুলে দেয়া হবে।

হলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের জন্য ছয়টি কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছে ছাত্রলীগ। বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্রিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভয়ে বাড়িতে চলে গেছে। এজন্য প্রোগ্রামে উপস্থিতি কম ছিলো। আমাদের চারটি রুম তালা দিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন দুইটি রুমে সবার অবস্থান করতে হচ্ছে।

আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, যারা হলে ছিলো তাদের সবাই প্রোগ্রাম করেছে। আমি বাসায় গিয়েছিলাম, এসে দেখি আমার থাকার রুম তালাবদ্ধ। আমার জামা-কাপড় ভেতরে, এজন্য গোসল করতেও পারছি না। হল কর্তৃপক্ষ কিছুই করছে না, কারণ তাদের এখানে কোনো কিছু করার ক্ষমতা নেই বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, জহুরুল হক হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০৫, ২০০৯, ৩০১০, ৩০১৪ ,৪০০১, ৪০০৯ এই ছয়টি কক্ষ বরাদ্দ রয়েছে। এখন ৩০১০ ও ২০০৯ রুম ব্যাতিত বাকি চারটি রুমের দরজায় তালা লাগানো রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকেলে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রুমে তালা দেওয়া বিষয়টি আমার কাছে জানা নেই। তবে এসব রুম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের। তাছাড়া অনেকে হলে নেই বাড়িতে তাই তালা দেওয়া থাকতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানাতে হবে। তবে হলের ছাত্রলীগরে কেউ তালা দেয়নি বলেও জানান তিনি।

বিকেলের দিকে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রহিম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজ ছুটির দিন থাকায় আমাদের হলে যাওয়া হয়নি। তবে ঘটনাটি খোঁজ নিচ্ছি। এরপর সন্ধ্যার দিকে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, হলের মধ্যে এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলেও তা মিমাংসা হয়েছে।

পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে হলের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও হলের এসব রুম তালাবদ্ধ রয়েছে। ফলে নিজ রুমে প্রবেশ করতে পারছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ