প্রতি ম্যাচের পূর্বে প্রার্থনা করে খেলা শুরু করেন সাদিও মানে

সাদিও মানে
সাদিও মানে  © সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন সদ্য বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়া সেনেগাল ফরোয়ার্ড সাদিও মানে। নতুন ক্লাবে নিজের অভিষেক ম্যাচ খেলার পরপরই পুরোনো বছরের পারফরম্যান্সের জন্য এই সুখবর পেলেন তিনি। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন সেনেগাল তারকা।

গত বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) মরক্কোর রাজধানী রাবাতে মানের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার। এই নিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো জিতলেন সাবেক এই লিভারপুল তারকা। প্রথমবার জিতেছিলেন ২০১৯ সালে।

সাদিও মানে একজন সেনেগালীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে জার্মানির পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর বুন্দেসলিগার ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ এবং সেনেগাল জাতীয় দলের হয়ে একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি মূলত একজন বাম পার্শ্বীয় খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় এবং ডান পার্শ্বীয় খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন।

সেনেগালীয় ফুটবল ক্লাব জেনারেশন ফুটের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে মানে ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং এই ক্লাবের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০১১–১২ মৌসুমে, ফরাসি ক্লাব মেসের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, যেখানে তিনি ১ মৌসুম অতিবাহিত করেছেন; মেসের হয়ে তিনি ২২ ম্যাচে ২টি গোল করেছেন। অতঃপর ২০১২–১৩ মৌসুমে তিনি অস্ট্রীয় ক্লাব রেড বুল জালৎসবুর্গে যোগদান করেছেন, রেড বুল জালৎসবুর্গের হয়ে তিনি রজার স্মিটের অধীনে ১টি লিগ শিরোপাসহ ২টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন।

রেড বুল জালৎসবুর্গে ২ মৌসুম অতিবাহিত করার পর ইংরেজ ক্লাব সাউদাম্পটনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে তিনি সকল প্রতিযোগিতায় ৭৫ ম্যাচে ২৫টি গোল করেছেন। অতঃপর তিনি ছয় মৌসুম যাবত লিভারপুলের হয়ে খেলেছেন, যেখানে ১টি লিগ শিরোপাসহ ২০১৮–১৯ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ২০২২–২৩ মৌসুমে, তিনি ৩২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লিভারপুল হতে জার্মান বায়ার্ন মিউনিখে যোগদান করেছেন।

আরও পড়ুন: বাংলালিংক-যমুনা ব্যাংককে সাকিবের আইনি নোটিশ

২০১২ সালে, মানে সেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে সেনেগালের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। একই বছরে তিনি সেনেগালের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; সেনেগালের জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ৭০-এর অধিক ম্যাচে ২০-এর অধিক গোল করেছেন। তিনি সেনেগালের হয়ে এপর্যন্ত ১টি ফিফা বিশ্বকাপ (২০১৮) এবং ৩টি আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে (২০১৫, ২০১৭ এবং ২০১৯) অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৯ সালে আলিউ সিসের অধীনে আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে রানার-আপ হয়েছেন।

ব্যক্তিগতভাবে, মানে বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৮–১৯ প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুট এবং ২০১৯ সালে বর্ষসেরা আফ্রিকান ফুটবলারের পুরস্কার জয় অন্যতম।

প্রারম্ভিক জীবন

সাদিও মানে ১৯৯২ সালের ১০ এপ্রিল সেনেগালের সেদিউয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক ফুটবল

মানে সেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে সেনেগালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১২ সালের ২৬ জুলাই  তিনি ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ম্যাচে সেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন। সেনেগাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে তিনি শুধুমাত্র এই একটি মূল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন, তার দল উক্ত প্রতিযোগিতায় শুধুমাত্র কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি মোট ৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

২০১২ সালের ২৫ মে, মাত্র ২০ বছর ১ মাস ১৫ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী মানে মরক্কোর বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সেনেগালের হয়ে অভিষেক করেছেন। উক্ত ম্যাচের মুল একাদশে তিনি অন্তর্ভুক্ত ছিলেন; ম্যাচে তিনি ১৭ নম্বর জার্সি পরিধান করে একজন বাম পার্শ্বীয় খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ম্যাচটি সেনেগাল ১–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।

উক্ত ম্যাচে মুসা কোনাতের করা জয়সূচক গোলে অ্যাসিস্ট করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম অ্যাসিস্টটি করেন। সেনেগালের হয়ে অভিষেকের বছরে মানে সর্বমোট ৬ ম্যাচে ২টি গোল করেছেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের মাত্র ৯ দিন পর, সেনেগালের জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেন; ২ জুন, লাইবেরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের তৃতীয় গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেন।

এছাড়াও, ২০১৮ সালের ৮ জুন, তিনি ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন, ম্যাচটি সেনেগাল ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল।

মানে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য আলিউ সিসের অধীনে ঘোষিত সেনেগাল দলে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। ২০১৮ সালের ১৯ জুন, তিনি পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ফিফা বিশ্বকাপে অভিষেক করেছেন। উক্ত বিশ্বকাপে তিনি ৩ ম্যাচে ১টি গোল করেছেন। ২৪ জুন, জাপানের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ফিফা বিশ্বকাপে তার প্রথম গোলটি করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

মানের বাবা তাকে ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি ফুটবলকে পেশা হিসেবে অনুসরণ করেন। তিনি একজন অনুশীলনকারী মুসলমান এবং প্রতিটি ম্যাচ শুরুর পূর্বে তাকে দোয়া করতে দেখা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence