৮৫ শতাংশ ভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিধারীরা শেখাচ্ছেন ইংরেজি-গণিত  

  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দক্ষ ইংরেজি ও গণিত শিক্ষকের অভাব। পরিসংখ্যান বলছে, এসব বিষয়ে পড়াশোনা করানো শিক্ষকদের প্রায় ৮৫ শতাংশেরই ইংরেজি বা গণিতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেই! উচ্চশিক্ষা, চাকরি এবং ব্যবসায় সাফল্যের জন্য যখন ইংরেজি ও গণিত দক্ষতা অত্যন্ত জরুরি, তখন এই সংকট শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ তৈরিতে উদ্বেগ তৈরি করছে। যোগ্য শিক্ষকের অভাবে শিক্ষার্থীদের শেখার গতি ও দক্ষতা বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ শিক্ষা-তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ২০২৩ সালে সংগৃহীত তথ্যেও উঠে এসেছে। 

ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাধ্যমিক স্কুলগুলোয় মোট ইংরেজি শিক্ষকের সংখ্যা ৬০ হাজার ৮৫৭। তাদের মধ্যে ইংরেজিতে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ৪ হাজার ১৫৮, যা মোট শিক্ষকের ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ৫ হাজার ২১৮, যা মোট শিক্ষকের ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। সে অনুযায়ী ইংরেজির শিক্ষকদের ৯ হাজার ৩৭৬ জন বা ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ বিষয়টিতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

আর ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর নেই ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশের। বর্তমানে যারা ইংরেজি পড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে বড় অংশই অন্য বিষয়ে ডিগ্রিধারী। তাদের মধ্যে ৫০ দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ৩০ হাজার ৯৪৮ জন শিক্ষকের স্নাতক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক ১০০ নম্বরের ইংরেজি ছিল এবং ১০ দশমিক ৫২ বা ৬ হাজার ৪০৪ জনের স্নাতক পর্যায়ে ৩০০ নম্বরের ইংরেজি ছিল। এছাড়া ১৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বা ১০ হাজার ৯৮২ জন শিক্ষকের স্নাতকে ইংরেজি ছিলই না। আর ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ বা ৩ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষক এইচএসসি পাস।

শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইংরেজিতে স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মেধাবী শিক্ষার্থীদের বড় অংশই বর্তমানে শিক্ষকতায় আগ্রহী নন এবং যারা শিক্ষকতায় আসছেন তাদের বেশির ভাগই অন্য কোথাও সুযোগ না পেয়ে আসছেন। 

একই চিত্র উঠে এসেছে গণিতের ক্ষেত্রেও, মাধ্যমিক স্কুলগুলোয় মোট গণিত শিক্ষকের সংখ্যা ৬৪ হাজার ১৪৭। তাদের মধ্যে গণিতে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৩৬, যা মোট শিক্ষকের ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আছেন ৪ হাজার ৬৪৩ জন, যা মোট শিক্ষকের ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। সে অনুযায়ী গণিতের শিক্ষকদের মধ্যে বিষয়টিতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আছেন মাত্র ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ গণিতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ছাড়াই শিক্ষার্থীদের বিষয়টি শেখাচ্ছেন ৮৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষক। 

বর্তমানে যারা গণিত পড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগই স্নাতক পর্যায়ে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি গণিত পড়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ১২ হাজার ৯ জন শিক্ষক স্নাতক পর্যায়ে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের পাশাপাশি গণিত পড়েছেন। পদার্থ, রসায়ন ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে গণিত পড়েছেন ১২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৭ হাজার ৭৪৩ জন। এছাড়া ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বা ৭ হাজার ৯৪৭ জন শিক্ষকের উচ্চ মাধ্যমিকে গণিত থাকলেও বিএসসিতে গণিত ছিল না। ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশের বা ১০ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষকের ডিগ্রি (পাস) পর্যায়ে গণিত ছিল না এবং ১১ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষকের উচ্চ মাধ্যমিকে গণিত ছিল না। আর ডিগ্রি বা এইচএসসি পর্যায়ে গণিত ছিল না ৫ দশমিক ৩১ বা ৩ হাজার ৪০৬ জন শিক্ষকের।

এছাড়া এ দুই বিষয়ে শিক্ষকের সংকটও এখন প্রকট। ফলে বিভিন্ন স্কুলে অন্য বিষয়ের শিক্ষকদেরও অনেক সময় গণিত পড়াতে দেখা যায়। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence