মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানে নাম্বার কমছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:২৬ PM , আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩২ PM
মাধ্যমিকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে আগামী জানুয়ারিতে। নতুন এ শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক অথবা বিজ্ঞান বিভাগ বেছে নেয়ার আর কোনো সুযোগ থাকছে না। সেক্ষেত্রে সব শিক্ষার্থীকেই বাধ্যতামূলকভাবে সাধারণ ১০টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
এতদিন মাধ্যমিকে শিক্ষার্থীদের বিভাগভিত্তিক বিষয়ে অন্তত ৪০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানের পাশাপাশি উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা ইত্যাদির মতো বিষয়গুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটিকে বাধ্যতামূলক ও একটিকে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তবে বর্তমান শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলোকে একীভূত করে ১০০ নম্বরের ‘বিজ্ঞান’ হিসেবে পড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ নতুন শিক্ষাক্রমে নবম-দশম শ্রেণীতে মোট বিষয়ে রাখা হয়েছে ১০টি। ১ হাজার নম্বরের পরীক্ষায় বিজ্ঞানে থাকছে ১০০, যা মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট নম্বরের মাত্র ১০ শতাংশ।
বিশেষায়িতের পরিবর্তে ‘একমুখী’ হিসেবে অভিহিত নতুন এ শিক্ষাক্রম প্রচলনের বিষয়টিতে আপত্তি তুলছেন শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ ও অভিভাবকদের বড় একটি অংশ। তাদের ভাষ্যমতে, নতুন এ শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের মতো বিশেষায়িত শিক্ষা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। ‘একমুখী’ এ শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমুখী করে তোলার কথা বলা হলেও এর বিপরীত ঘটে যাওয়ার বড় আশঙ্কা রয়েছে। সমন্বিতভাবে সব পড়ানো হলে শিক্ষার্থীরা সবকিছু সঠিকভাবে শেখার সময় পাবে না। বিশেষ করে বিজ্ঞান শিক্ষায় আরো অনাগ্রহী হয়ে পড়তে পারে তারা।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ১০টি বিষয় থাকবে। এগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এছাড়া এতদিন মাধ্যমিকে পরীক্ষা হয়েছে নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রম মিলিয়ে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুধু দশম শ্রেণীর পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে।
নতুন এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে উচ্চতর পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো কমবে বলে আশঙ্কা শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের বড় একটি অংশের। তারা বলছেন, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এতদিন ধরে নবম-দশম শ্রেণীতে পৃথকভাবে তুলনামূলক বড় পরিসরে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতের মতো বিষয়গুলোয় পড়াশোনা করে আসছে। মাধ্যমিকের পর যত ওপরের স্তরে যাচ্ছে, বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের হারও তত কমছে। এ অবস্থায় মাধ্যমিক পর্যায়েই বিজ্ঞান শিক্ষার পরিসর সংকুচিত করে আনলে পরে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো কমে আসবে।