বন্ধ স্কুলেই চলছে কোচিংয়ের ক্লাস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৪১ PM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:০৯ PM
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারি নীতিমালা প্রয়োগের কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তবে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, কোচিংয়ে সবকিছু খারাপ তা নয়। কোচিংয়ের মধ্যে যেটাকে আমরা কোচিং বাণিজ্য বলি, সেখানে ‘কোচিং’ কথাটিও খারাপ নয় এবং ‘বাণিজ্য’ কথাটিও খারাপ নয়। কিন্তু যারা শ্রেণিকক্ষে পাঠদান না করে শিক্ষার্থীকে বাধ্য করান কোচিংয়ে যেতে এবং সেখান থেকে তারা অতিরিক্ত রোজগারটা করেন। সেখানেই সমস্যা। এসময় তিনি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের দরকার হবে না আর নোট-গাইডের ব্যবসা চলবে না বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ছাড়াও কোচিং করান অনেক শিক্ষক। অতিরিক্ত রোজগারের আশায় অনেক শিক্ষার্থীকে চাপ প্রয়োগ করে কোচিংয়ে আসতেও বাধ্য করার শিক্ষকরা। তবে চলতি রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এসময় শ্রেণিকক্ষ খুলে ইচ্ছে মতো কোচিং করাচ্ছেন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আপতুন নেসা খাতুন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রুবেল হোসেন নামের এক শিক্ষক। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিনি এ কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ওই স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন ভবনের দোতলায় সকাল ১১টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ইংরেজি শিক্ষক রুবেল হোসেন স্কুলের শেণিকক্ষেই শিক্ষার্থীদের কোচিং করাচ্ছেন। গণমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেলে দ্রুত শ্রেণি কক্ষ থেকে বেরিয়ে বারান্দায় আসেন তিনি।
আরও পড়ুন: কোচিং বাণিজ্য— কথাটি খারাপ নয়: শিক্ষামন্ত্রী
ইংরেজি শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, বিষয়টি তো বেআইনি। এর আর কি বলব! তবে এটা পারমানেন্ট কিছু না। স্কুল চালু হলে আর এখানে পড়ানো হবে না। এছাড়া এতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার কিছু নেই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে গত ২৩ মার্চ থেকে রমজানের ছুটি শুরু হয়েছে এবং তা চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই চলছে কোচিং বাণিজ্য। দ্রব্যমূল্যের এ বৃদ্ধির সময়ে ছেলে-মেয়ের কোচিংয়ের খরচ চালাতে গিয়ে অভিভাবকরা যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন অন্যদিকে আবার উপেক্ষিত হচ্ছে সরকারের নীতিমালা।
আরও পড়ুন: দুই অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়ে ড্যাফোডিলকে ইউজিসির চিঠি
স্কুলে কোচিং চালুর বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাভকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্যাররা ক্লাসের সময় আসেন না, গল্পগুজব করে। আর পরীক্ষার সময় আসলে বলে বাসায় যেতে, দাগায় দিবে। আমরা গ্রামের মানুষ। বই-খাতা কিনতেই তো টাকা শেষ হয়া যায়, কোচিং করুম কেমনে? স্যারের ক্লাসে ভাল কইরা পড়াইলে আর কোচিং লাগত না।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরুন নাহার ইয়াসমিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, বিষয়টি সর্ম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। আমি দ্রুতই পদক্ষেপ নেব।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাঃ মুজিবুর রহমান বলেন, সরকারি নীতিমালার বাইরে গিয়ে যদি কোচিং বাণিজ্য করেন তবে ওই শিক্ষক অপরাধ করেছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতিকে বিষয়টি অবহিত করুন। এতে যদি কোনও প্রতিকার না হয় তবে আমি ব্যবস্থা নেব।