মাইলস্টোন ট্রাজেডি

ক্লাস শেষ হয়েছিল আগেই, প্রস্তুতি চলছিল কোচিংয়ের

মাইলস্টোন স্কুল
মাইলস্টোন স্কুল  © টিডিসি সম্পাদিত

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দুর্ঘটনার সময় স্কুল ভবনে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যদিও ক্লাস শেষ হয়েছিল আগেই। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী, আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুইজন শিক্ষক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত ক্লাস দুপুর ১টার দিকে শেষ হয়েছিল। ক্লাস শেষ করে শিক্ষার্থীরা তখন ভবনে অবস্থান করছিলেন কেবল কোচিং ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য। হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।

শিক্ষার্থীদের অনেকে জানায়, তারা পড়ার টেবিলে বসে ছিল, কেউ বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও কম্পনে সবাই চমকে ওঠে। প্রথমে কেউ কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও পরে বাইরে বেরিয়ে এসে ঘটনার ভয়াবহতা টের পান।

দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের বাসায় কিংবা অন্য কোথায় কোচিং বা প্রাইভেট পড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে শিক্ষকরা চাইলে বিদ্যালয়ে কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারেন। মাইলস্টোনের সবগুলো শাখা একই নিয়মে পরিচালিত হয়। সূত্রের তথ্য, মাইলস্টোনে স্কুল পর্যায়ে ছুটি হয় দুপুর একটার দিকে। আর কলেজ পর্যায়ে ছুটি হয় ১টা ৪০ মিনিটে। স্কুলের কোচিং শুরু হয় দেড়টায় আর কলেজের দুইটা থেকে। ঘটনার সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা কোচিং করতে অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে আহত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমার ভাতিজা কোচিং করতে অপেক্ষা করছিলেন। ওর ছুটি হয়েছিল একটায়। তবে শিক্ষকরা স্কুলে কোচিং নেওয়ায় সে ভেতরেই ছিল।’

মাইলস্টোনের উত্তরা শাখার ইংরেজির এক শিক্ষক বলেন, ‘কোচিং নেওয়ার বিষয়টি সঠিক। তবে আমাদের এখানে কাউকে কোচিংয়ের জন্য বাধ্য করা হয় না। আমরা অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়াই।’

এর আগে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া প্রেরণা নামে এক ছাত্রী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের দুপুর ১টার দিকে ছুটি হলেও সাধারণত ১০ মিনিট পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তাই, আমরা ক্লাসেই ছিলাম। কিন্তু দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে বের হয়ে গিয়েছিলাম আমি। তবে বের হয়ে যাওয়ার পর একটার দিকে হুট করে আকাশে দেখি একটি প্লেনের ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এরপর আমরা যে ভবনে ছিলাম, হায়দার আলী ভবনে প্লেনটি ধস করে পড়ছে। পরে জোরে একটা বিস্কোরণ; এটার মানে আমাদের চোখের সামনে অনেকগুলো লাশ যাচ্ছে। লাশ না আসলে পুরে গেছে, হাত-পা ছিঁড়ে গেছে এমন কিছু। প্রেরণা আরও যোগ করে, তাদের নিয়ে যাচ্ছিল, ওইখানেই চেঁচামেচি করছিলাম আমরা। সবাই বলছে যে ঠিক আছে ঠিক আছে। কিন্তু আমরা দেখছি যে এখানে সবার অবস্থা খারাপ। সবাই বলছে মাঠে পরছে, মাঠে পরছে। কিন্তু আমরা নিজের চোখে দেখছি, ভবনের ওপর পড়ছে।


সর্বশেষ সংবাদ