শহীদ রায়হানের পাসের খবরে অঝোরে কাঁদলেন বাবা-মা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. রায়হান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. রায়হান  © ফাইল ফটো

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে রাজধানীর বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. রায়হান। মিছিলে হঠাৎ মাথায় ও পিঠে গুলি এসে লাগে তার। শহীদ হন গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রায়হান। আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। তার ফলাফল দেখে অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ রায়হানের মা-বাবা।

রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেন ও আমেনা দম্পতির একমাত্র ছেলে। তিনি রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় ফল জানতে পারে তার পরিবার। ফল পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাহরিয়ার পেলেন জিপিএ-৪.৮৩

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বাড্ডায় বিজয় মিছিলে যোগদান করলে গুলিবিদ্ধ হন রায়হান। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন। 

রায়হানের একমাত্র বোন উর্মি আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই অনেক ভালো ছাত্র ছিল। তার আচরণ কখনো খারাপ ছিল না। ফলাফল দেওয়ার খবর শুনে বাবা-মা কান্না করছেন।’

রায়হানের মা আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফল দিয়ে কী হবে? সে পাস করসে তা দিয়ে এখন কি করব। তার আরও ভালো রেজাল্ট করার কথা। সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা এখনও কান্না করছেন। নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাইয়েছি। তাকে ঢাকায় পড়ালেখা করাইসি। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন বুলেটে শেষ হয়ে গেছে।’

গুলশান কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কালাম বলেন, ‘আমাদের কলেজ থেকে এ বছর রায়হানসহ ৩৯৪ জন বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারমধ্যে ৩৮১ জন পাস করেছে। রায়হান জিপিএ ২.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তার ফলাফল আরও ভালো হওয়ার কথা। কিভাবে এত খারাপ হলো তা আমাদের জানা নেই। তবে তার মৃত্যু আমাদের এখনও কাঁদায়। সরকার যেন তার পরিবারের সঙ্গে থাকে সে আশা করছি।’


সর্বশেষ সংবাদ