ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা ফের বিয়ে করলেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৫ PM , আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬ PM
ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান এবং তার প্রাক্তন স্ত্রী সাবিকুন নাহার ২১ অক্টোবর বিচ্ছেদ করেন। কিন্তু বিচ্ছেদের মাত্র এক মাসের মধ্যেই তারা আবারও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছেন সাবিকুন নাহার নিজেই।
পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাবিকুন নাহার জানিয়েছেন, দু’জনেই নতুন করে সম্পর্ককে শুরু করতে পেরে খুশি এবং ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক জীবনযাপনের আশা করছেন তারা।
বিয়ে করার দেওয়া স্ট্যাটাসে সাবিকুন নাহার জানান, আমাদের মাঝে চিরস্থায়ী ৩ তালাক বায়েন হয়নি, স্ত্রী কর্তৃক খুলা তালাক হয়েছিল। যেখানে উভয়ের সম্মতিতে যে কোন সময় নতুন বিবাহের মাধ্যমে সংসার শুরু করার সুযোগ থাকে! সেটাই হয়েছে। ওয়ামা আ'লাইনা ইল্লাল বা'লাগ।
তিনি আরও লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ! Sabiqun Nahar Sarah got married with Abu Taw Haa Muhammad Adnan।
তিন লিখেন, দুনিয়াটা ক্ষনস্থায়ী। পুরোদস্তুর ধোঁকা, নিখাঁদ এক প্রতারণা। কতদিনই আর বাঁচব আমরা এই দুনিয়ায়? অনন্ত পরকালের চুলছেড়া হিসেব আর চিরস্থায়ী জান্নাতের সাফল্যই যে সব! সেই সাফল্যের ভিখারী হয়েই আজ কথাগুলো লিখছি.......
কে কি ভাববে? কে কি বলবে?
কি হবে আর কি নাহবে এসবেরও বিন্দুমাত্র পরোয়া নেই......
প্রতিনিয়ত আয়িশা তার বাবাকে খোঁজে!
বাবা যাবো!
বাবা গাড়ি!
বাবা কই?
শব্দগুলোর ওজন উঠানোর কোনো পরিমাপক মহাবিশ্বে নেই।
উসমানও মাকে পাচ্ছে না। উসমানের সামনে অন্যরা তাদের মায়ের নিকট আম্মু বলে ছুটে যাচ্ছে। অন্যদিকে নির্লিপ্ত চাহনিতে উসমানের প্রশ্ন তার আম্মুর কাছে কখন নিয়ে যাবে! যা ঘটে গেছে তার অনিবার্য পরিণতি যে এটাই তা হয়তো আমরা জানতাম, তবে জানা আর প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করা যে কখনোই এক নয়! ইলমুল ইয়াক্বিন আর হাক্কুল ইয়াক্বিনে আছে আকাশসম ফারাক। জানা বিষয়টি উপলব্ধি করেছি আমরা।
বেশাক আমাদের ভুল ছিলো। কিছু ভুল বুঝেছি, বুঝানোও হয়েছে! উসমানের বাবার প্রতি প্রগাঢ় মুহাব্বাত থেকেই অস্থির হয়েছি, কিছু রাগ, জেদ ও সীমালঙ্ঘনও হয়ে গেছে! সাথে মানুষ ও জ্বীন শয়তান, বিচ্ছেদের যাদু কি না ছিল? হয়তো এভাবেই আমাদের ভাগ্য লিখা হয়েছিলো। তাকদিরের কাছে তো অনেক বড়রাও অসহায় ছিলেন, যেমন গ্রহণের সময় নিরুপায় থাকে চাঁদের আলো। তাই বলে কি চাঁদ কস্মিনকালেও কলংকিত? সে যে আজন্ম আমার চাঁদ-ই ছিলো!
দুরাচার শয়তান সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বারংবার!
শুভ্র, সচ্ছ, সুন্দরে, চিন্তায় ইবলিসকে তাই ঠাঁই দেইনি আর। ফা লিল্লাহিল হামদ!
অতঃপর...
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন।
উসমান ও আয়িশা তাদের বাবা মাকে ফিরে পেয়েছে!!!!
আল্লাহুম্মা লাকাল হামদ।
আমি আমার মোহাব্বত, আমার আত্মা, সংসার আর চাদরটাকে ফিরে পেয়েছি!
সকলের সামনে বরাবরই বলে গিয়েছি আমার হৃদয়ের স্পন্দন তুমি।
"তোমাকেই ভালোবাসি"
জানি তোমাকে প্রচন্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছি! ভুল বুঝেছি! তুমি গায়রতে সম্মানে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছো! যা উদ্দেশ্য ছিলনা তা হয়ে গেছে! যা বোঝাতে চাইনি তাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে! অজস্র আঘাত আর ক্ষত নিয়ে মুখ বুজে নীরবেই চলে গেছ! প্রতিউত্তর টুকুও করোনি! তোমার অনন্য সবরের প্রতিদানে আরশের রব তোমার দো-জাহানের সমস্ত হাজত মাকসাদ পূরণ করে দিন। আজ আমি তোমাকে ফিরে পেয়ে কত খুশি তা বলার আমার কোনো ভাষা নেই!
শুধু এটুকুই দু'আ যে, এতকিছুর পরেও আমাকে তুমি যেভাবে খুশি করেছো আল-ওয়াদুদ শতগুণ উত্তমরূপে তোমাকে তার দিদার দিয়ে রোজ হাশরে খুশি করে দিন!
তোমার রিসেন্ট লেকচারটা শুনেছি।
হ্যাঁ, আমি তোমার জন্য যায়েদ (রাঃ) হতে পারিনি। তবে আমি জীবন দিয়ে রবের সন্তুষ্টির তরে, দ্বীনের পথে তোমার জন্য নিজেকে প্রমাণ করবই ইনশাআল্লাহ!
আর কিছুই বলার নেই।
আল্লাহ চান তো অচিরেই প্রতিটি অযাচিত বিষয় পুরো দুনিয়ার সামনে দীপ্তমান হবে ইনশাআল্লাহ!
আজ শুধুই-
"আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন"
তিনিই সেই রব যিনি মৃত থেকে জীবিত করেন।
তিনিই সেই রব যিনি ধ্বংস থেকেও নতুন করে সৃষ্টি করেন।
তিনিই সেই রব যিনি অসম্মানের সূরতেও সম্মানিত করেন।
তিনিই সেই রব যিনি পরাজয়ের ভেতর থেকেও জয় বের করে আনেন।
তিনিই সেই রব যিনি হতাশ হওয়ার পরও রহমত দ্বারা সিক্ত করে দেন।
সবার কাছেই আমরা দু'আর মুহতাজ!
এর আগে ২১ অক্টোবর নিজেদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টির সমাধান হওয়ার কথা জানান দুজন। ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানকে খোলা ওই তালাক দেন সাবিকুন নাহার। সে সময় স্ট্যাটাসে লেখা হয়, ‘উস্তাদ আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান ও তার প্রাক্তন স্ত্রী সাবিকুন নাহারের পারিবারিক বিষয়গুলো দেশের বরেণ্য মুরুব্বি ওলামায়ে কেরামদের মাশওয়ারার ভিত্তিতে শারিয়া মোতাবেক সুন্দরভাবে সমাধান ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।’
আদনান লিখেছেন— ১. ‘মুরুব্বি ওলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে মুহতারাম আবু ত্বহা আদনান তার প্রাক্তন স্ত্রীকে খুলা তালাকের প্রস্তাবনা দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন। এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে বর্তমান কোনো বৈবাহিক সম্পর্ক অবশিষ্ট নেই।’
২. ‘বিয়ের সম্পূর্ণ মোহরআনা পূর্বেই পরিশোধ করা ছিল। এ বিষয়ে কোনোরকম আলোচনা ও দেনা-পাওনা বাকি নেই আলহামদুলিল্লাহ।’
৩. ‘তিনি (সাবিকুন নাহার) মিরপুর ঢাকাস্থ Taw Haa Zin Nurain Islamic Center এর উন্নয়ন প্রকল্পে গত বছর প্রায় ৫ ভরি এবং অন্যান্য কিছু খাতে (তার ভাষ্যমতে) আরো প্রায় তিন ভরি স্বর্ণ ও নগদ অর্থ প্রতিষ্ঠানকে ফেরতযোগ্য ধার হিসেবে প্রদান করেছিলেন, যা বিগত মাজলিসে তিনি তার প্রাক্তন স্বামী আবু ত্বহা আদনান সাহেবের কাছে দাবি করেন।’ ওলামায়ে মাজলিস এগুলো পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং উভয় পক্ষই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। এই অর্থ তার শারঈ হক্ব তাই প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পরিশোধে সচেষ্ট আছে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৮ ভরি স্বর্ণের বিনিময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের যে গুজব রটানো হয়েছে তা সত্য নয়। ’ ‘উস্তাদ আবু ত্বহা আদনান ও তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উক্ত গুজব প্রচারণার কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই। অনুগ্রহ করে আপনারা কেউ কোনো প্রকার গুজবে প্রভাবিত হবেন না এবং কারো প্রতি কোনো মিথ্যা অভিযোগ বা অপবাদ আরোপ করবেন না।’
৪. ‘বাচ্চাদের বিষয়ে মুরব্বিদের মাজলিসে শরিয়াহ সম্মতভাবে ফয়সালা প্রদান করা হয়েছে, উভয় পক্ষই মাজলিসের উক্ত ফয়সালা সর্বসম্মতিক্রমে মেনে নিয়েছেন।’