ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্পের কারণ ও করণীয়

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

ইসলামের দৃষ্টিতে ভূমিকম্প শুধু পৃথিবীর কম্পন নয় বরং মানুষের আত্মশুদ্ধি ও দায়িত্ববোধের একটি শক্তিশালী স্মরণ যা কুরআন ও হাদিসে বারবার উঠে এসেছে।ভূমিকম্প আল্লাহর সৃষ্টি জগতের একটি প্রাকৃতিক নিয়ম। ইসলামে পৃথিবীর প্রতিটি ঘটনা আল্লাহর ইচ্ছার অংশ। কুরআনে বলা হয়েছে: ‘তাঁরই নির্দেশে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত।’ (সূরা রূম: ২৫)

এ আয়াত স্পষ্টভাবে জানায়, প্রাকৃতিক নিয়ম, আইন ও ঘটনার পেছনেও আল্লাহর সিদ্ধান্ত রয়েছে। তাই ভূমিকম্পের বৈজ্ঞানিক কারণ থাকলেও ইসলাম এটিকে আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করে।

ভূমিকম্প সতর্কতা ও সতর্কবার্তা
হাদিসে আছে, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘কোনো সমাজে যখন ফিতনা, অন্যায় এবং অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে ভূমিকম্প ও শাস্তির অন্যান্য নিদর্শন দেখা দেয়।’(মুসনাদে আহমদ) হাদিস বিশারদরা ব্যখ্যায় বলেছেন, এই বাণী মানবসমাজকে নৈতিক শুদ্ধতার দিকে ডাক দেয়। এটা সরাসরি ‘শাস্তি’ নয়, বরং চেতনা জাগানোর এক সতর্কবার্তা।

কুরআনে আল্লাহ বলেন: ‘আমি নিশ্চিতভাবেই তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, জান-মালের ক্ষতি এবং ফল-ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করবো।’ (সূরা বাকারা: ১৫৫) ইসলাম ভূমিকম্পকে মানুষের জীবনে একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করে। এ পরীক্ষা- কারো জন্য ধৈর্যের পরীক্ষা, কারো জন্য ফিরে আসার পথ, কারো জন্য আল্লাহর প্রতি বিনয় প্রদর্শনের সুযোগ। এসব ঘটনাই মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে এই পৃথিবী স্থায়ী ঠিকানা নয়।

ইতিহাসে পাওয়া যায়, একবার মদিনায় ভূমিকম্প অনুভূত হলে নবী (সাঃ) বলেছিলেন, ‘তোমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাও।’ সাহাবারা ভূমিকম্প ঘটলে তাওবা করতেন, নামাজ পড়তেন, দরিদ্রকে দান করতেন, মানুষকে সতর্ক করতেন অর্থাৎ ইসলাম ভূমিকম্পকে শুধুই ভয় নয়, আত্মিক জাগরণের মুহূর্ত হিসেবে দেখে।

ভূমিকম্পের সময় মুসলমানদের করণীয়
ইসলাম ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে কিছু বিশেষ কাজ করার নির্দেশ দেয়। ইস্তিগফার, দোয়া, তাওবা, দান, মুসিবতে ধৈর্য, নিহতদের জন্য দোয়া, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘দান বিপদ দূর করে।’


সর্বশেষ সংবাদ