জুমার দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত

বায়তুল মোকাররম মসজিদ
বায়তুল মোকাররম মসজিদ  © সংগৃহীত

শুক্রবার হলো মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ ও মর্যাদাপূর্ণ দিন, যা সাপ্তাহিক উৎসব হিসেবেও বিবেচিত। সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা এই দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচন করেছেন। এ দিনকে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমা’।

আল্লাহ তায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও গোটা বিশ্বজগৎকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল শুক্রবার। এ দিনেই তিনি হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেন, জান্নাতে প্রবেশ করান এবং এ দিনেই তাঁকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। এমনকি কেয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।

হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আগের জাতিগুলোর কাছে জুমার মর্যাদা অজ্ঞাত রাখেন। তাই ইহুদিরা শনিবার নির্ধারণ করে। আর খ্রিস্টানরা রবিবার নির্ধারণ করে। অতঃপর আমরা আসি। আমাদের কাছে তিনি জুমার দিনের মর্যাদা প্রকাশ করেন। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৫৬)।

জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমলসমূহ

১. দরুদ শরিফ পাঠ: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: “যে ব্যক্তি আসরের নামাজের পর না উঠে বসা অবস্থায় ৮০ বার নিম্নোক্ত দরুদ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে এবং তার নামে ৮০ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে।”

দরুদটি হলো:
‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলীমা।’

২. সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করা: জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করলে কিয়ামতের দিন তার জন্য আকাশতুল্য নূর প্রকাশিত হবে। শেষ জামানায় দাজ্জালের ফিতনা থেকে আল্লাহ তায়ালা রক্ষা করবেন।

৩. দু’টি খুতবার মাঝে মনে মনে দোয়া করা: জুমার নামাজের খুতবার মাঝে (হাত না তুলে) অন্তরে দোয়া করা মুস্তাহাব।

৪. আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া ও জিকিরে মগ্ন থাকা: সূর্যাস্তের একটু আগে থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনাময় সময়, তাই এ সময় জিকির, তাসবীহ ও দোয়ায় মশগুল থাকা উচিত।

. শিরক থেকে বিরত থাকা: আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দোয়া ইবাদতের অংশ, এবং তা খালেস নিয়তে করতে হবে।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: “তোমাদের রব বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ যারা অহংকার করে আমার ইবাদত থেকে বিমুখ হবে, তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সুরা গাফির, আয়াত: ৬০)

৬. পাপ বা সম্পর্কচ্ছিন্নতার উদ্দেশ্যে দোয়া না করা: রাসুল (সা.) বলেন, “বান্দার দোয়া কবুল হয়, যদি সে পাপ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া না করে এবং তাড়াহুড়া না করে।” অর্থাৎ, যদি কেউ ধৈর্য হারিয়ে দোয়া থেকে বিরত হয়, তবে সে দোয়ার বরকত থেকে বঞ্চিত হয়। (মুসলিম, হাদিস : ৬৮২৯)

৭. দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করা: রাসুল (সা.) বলেন, “তোমরা কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো। কারণ, অমনোযোগী ও অসাড় অন্তরের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না।” (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৯)


সর্বশেষ সংবাদ