কয়েক মিনিটেই কোটিপতি স্কুলশিক্ষিকা হিমানি

কেবিসি সিজন ১৩ এ হিমানি
কেবিসি সিজন ১৩ এ হিমানি  © সংগৃহীত

১০ বছর আগের এক দুর্ঘটনা জীবন ওলটপালট করে দিয়েছিল তার। মুহূর্তে একরাশ অন্ধকার নেমে এসেছিল চোখের সামনে। দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বলেছিলাম ভারতের আগ্রার শিক্ষক হিমানি বুন্দেলার কথা। সম্প্রতি কয়েক মিনিটেই কোটিপতি বনে গিয়েছেন তিনি। এজন্য তিনি কী করেছেন জানেন?

মাত্র একটি কঠিন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ায় এই নারী জিতেছেন কোটি টাকা। সম্প্রতি কেবিসি সিজন ১৩ এর একটি এপিসোডে উপস্থিত হন হিমানি। অমিতাভ বচ্চনের মুখোমুখি হয়ে কঠিন একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মুহূর্তেই এক কোটি টাকা জিতেন।

তার জন্য প্রথম প্রশ্নটি ছিল- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সে ব্রিটেনের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার জন্য নূর ইনায়েত খান কোন ছদ্মনাম ব্যবহার করেছিলেন? তার বিকল্প ছিল- ভেরা এটকিন্স, ক্রিস্টিনা স্কারবেক, জুলিয়েন আইসনার ও জ্যান মারি রেনিয়ার।

সঠিক উত্তর হলো- জ্যান মারি রেনিয়ার। নূর ইনায়েত খান ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ গুপ্তচর। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৪ সালে একটি নাৎসি জার্মানি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।

হিমানি বুন্দেলা কেবিসি’র সিজন ১৩ এর প্রথম কোটিপতি হয়েছেন এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে। তাকে দ্বিতীয় যে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সেটির সঠিক উত্তর দিলে ৭ কোটি টাকা জিততে পারতেন। তবে একটুর জন্য হাতছাড়া হয়েছে সেটি।

কারণ দ্বিতীয় প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি তার জানা ছিল না। এজন্য সেটি ছেড়ে দেন হিমানি। তাতে কি, একটি প্রশ্নের উত্তরে এক কোটি টাকা জিতে সবাইকে রীতিমতো চমকে দিয়েছেন সাহসী এই নারী।

কে এই হিমানি বুন্দেলা?

পুরো নাম হিমানি বুন্দেলা। আগ্রার মেয়ে হিমানি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি স্কুলের গণিতের শিক্ষিকা। ২০১১ সালের এক দুর্ঘটনায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। তখন হিমানির বয়স মাত্র ১৬ বছর। বাবা-মা ভেবেছিলেন, মেয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

তখন থেকেই দু’চোখে প্রায় দেখতে পান না হিমানি। অনেক চিকিৎসার পর মোটা কাচের চশমা পরে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে হয় তাকে। তবে ডান চোখে একেবারেই দেখতে পান না তিনি। বাম চোখের জ্যোতিও ক্রমশ হারিয়ে ফেলছেন।

তার পরিবারের অবস্থাও স্বচ্ছল নয়। মহামারিতে চাকরি হারিয়েছেন বাবা। বাবার জন্য ব্যবসা, ভাই-বোনদের ভবিষ্যতের জন্য মোটা অংকের টাকা সবকিছুরই ব্যবস্থা করতে চান হিমানি। তার কথায়, ‘পরিবারই আমার সবকিছু।’

হাজারও প্রতিবন্ধকতা স্বত্ত্বেও হিমানি থেমে যাননি। নিজের নিভু নিভু চোখের আলো দিয়ে জ্ঞানকে সম্বল করে শিক্ষিকা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন হিমানি।

কেবিসি থেকে জেতা এক কোটি টাকা দিয়ে এবার হিমানি তার স্বপ্নপূরণ করবেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি কোচিং সেন্টার খুলবেন। সেসব শিশুকে সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে চান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence