ভর্তির আগেই সেশনজটে গুচ্ছের শিক্ষার্থীরা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা  © সংগৃহীত

এখনো ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বারবার মেধাতালিকা প্রকাশ করার পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। গুচ্ছের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই অর্ধেকের বেশি আসন ফাঁকা রয়েছে। ফলে কবে নাগাদ ক্লাস শুরু করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেটা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এদিকে একই শিক্ষাবর্ষের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলেছে মিডটার্ম পরীক্ষাও।

করোনা মহামারীর কারণে দেড় বছর পিছিয়ে আছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কমিয়ে আনা হয়েছে সেমিস্টারের সময়ও। গুচ্ছে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এখনো ক্লাস শুরু হয়নি। ফলে তারা করোনার কারণে এমনিতেই পিছিয়ে আছে আবার দেরিতে ক্লাস শুরু করার কারণে ভর্তির আগেই সেশনজটে পড়তে যাচ্ছে গুচ্ছের শিক্ষার্থীরা।

ভর্তি পরীক্ষার পর সবার আগে ক্লাস চালু করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু তারা। পরে ২৮ তারিখ থেকে সশরীরে ক্লাস নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। জানা যায়, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মিডটার্ম পরীক্ষা চলছে অধিকাংশ কলেজে। আসন ফাঁকা রেখেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস চালু করেছে ২১ ডিসেম্বর থেকে। ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চালু হয়েছে।

আরও পড়ুন- শাবি বন্ধ হলেও চলবে ভর্তি কার্যক্রম

গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২৬ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরুর কথা রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু করবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস চালু করবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা চলছে। সেখানে কবে নাগাদ ক্লাস শুরু হতে পারে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। 

দেশে প্রথমবারের মতো ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগের 'এ' ইউনিটে, ২৪ অক্টোবর মানবিক বিভাগের 'বি' ইউনিটে এবং ১ নভেম্বর বাণিজ্য বিভাগের 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ অক্টোবর এ ইউনিটের ফল প্রকাশ হয়। ২৬ অক্টোবর বি ইউনিটের ও ৩ নভেম্বর সি ইউনিটের ফল প্রকাশ হয়।

আরও পড়ুন- ওমিক্রনে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখতে জবির নির্দেশনা জারি

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, আমরা সকল অনুষদের ডিনদের সাথে মিটিং করে নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস আগামী মাসের  ১০ তারিখ অথবা তার আগেই শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফাঁকা আসনে ভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ৫ম মেধাতালিকার ভর্তি কার্যক্রম শেষে এক নোটিশে মেধাতালিকা অনুযায়ী বাকি সকল শিক্ষার্থীকে ডাকবো। যারা সঠিকভাবে তাদের কাগজপত্র জমা দিবে তাদেরকেই আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. মিজানুর রহমান ফাঁকা আসন পূরণের বিষয়ে বলেন, প্রথম মেধাতালিকা থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই এখনো ভর্তি হতে আসেনি। এজন্য আমরা ২য় মেধাতলিকা দেব এবং সেখান থেকে শূন্য আসনগুলো পূর্ণ হবে আশা করি। নতুন শিক্ষার্থীদের সশেনজটে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোপূর্বেই সেমিস্টার সময় কমানোর মত উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়নও করেছে। নতুন যে ব্যাচ আসছে তাদের ক্ষেত্রেও এই সময়সীমা ৬ মাস সেমিস্টারের বদলে ৪ মাস করা হবে৷

আরও পড়ুন- আসন পূরণ গুরুত্বপূর্ণ নাকি শিক্ষার সুযোগ?

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও কুবির কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমাদের আগামী ২৬ জানুয়ারি ক্লাস শুরু হবে। ২৫ তারিখের আগেই ফাঁকা আসনগুলো পূরণ হয়ে যাবে। গুচ্ছের কারণে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে করোনার কারণে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। তবুও আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতি পুষিয়ে নিতে।


সর্বশেষ সংবাদ