অসদাচরণের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন, ডাইনিং বন্ধ

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর অসদাচরণের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর অসদাচরণের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে  © সংগৃহীত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দোলনচাঁপা হলে কতিপয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর অসদাচরণের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন আহমেদুল বারী বলেছেন, যারা অসদাচরণ করেছে তারা অসৎ উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করতে চেয়েছিল। তাই অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের হুমকি, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষিকার আবেদন

শিক্ষক সমিতির সভাপতি এমদাদুর রাশেদ বলেছেন, দোলনচাঁপা আবাসিক হলের প্রভোস্টের সঙ্গে কতিপয় শিক্ষার্থীর অসদাচরণের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন কার্যদিবসের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত না করলে সব শিক্ষক একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন। একই সঙ্গে সেই সব অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে ছাত্রীদের জন্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের আয়োজন করে দোলনচাঁপা হল কর্তৃপক্ষ। খাবারের জন্য পোলাওয়ের চাল ও খাসি কেনা হয়। মেয়েদের ওই আবাসিক হলে আড়াই শ ছাত্রী থাকেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান উত্তেজিত হয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে সব টাকা তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দোলনচাঁপা হলের প্রভোস্ট সিরাজুম মুনিরাকে হুমকি দেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এ ঘটনায় অপমানবোধ করায় আরিফ আহমেদ, আফরুজা ইসলাম, রাশেদুর রহমান ও ফারজানা খানম—এই চার আবাসিক শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হ‌ুমায়ূন কবীরের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

তবে রাকিবুল হাসান হুমকির অভিযোগ নাকচ করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুরোধে দুটি হলের খাবারের আয়োজন একসঙ্গে করতে চেয়েছিলাম। কারও সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করিনি এবং কোনো টাকাও চাওয়া হয়নি।’

আরও পড়ুন: মানুষ প্রধানমন্ত্রীর শপথ বর্জন করেছে: নুর

তবে, এ ঘটনার পর থেকে হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। ডাইনিং বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষার্থীরা বলেন, ডাইনিং বন্ধ থাকায় তাঁরা বেকায়দায় পড়েছেন। অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে তাদের খেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য মো. জালালউদ্দীন বলেছেন, হল দুটির ডাইনিং চুক্তিভিত্তিকভাবে ঠিকাদারের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। হলের প্রভোস্টসহ পাঁচ শিক্ষক পদত্যাগের পর আতঙ্কিত হয়ে কোনো কিছু না জানিয়ে ঠিকাদার ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রভোস্ট ও চার আবাসিক শিক্ষক পদত্যাগ করেন। এরপর পাঁচ শিক্ষকের পদত্যাগের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ