কুবিতে উপাচার্য-ট্রেজারারের প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব

 উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী ও  ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান  © টিডিসি ফটো

বেশ কিছুদিন ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের মধ্যে বিরোধের গুঞ্জন থাকলেও অনুষ্ঠানে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তারা একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করেন। এ দ্বন্দ চলমান থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আমি অনেক কষ্ট করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে তিলে তিলে দেশের কাছে পরিচিত করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি সবাই আপনাদের প্রশংসা করে। আপনাদের এই সম্পদ আপনাদেরই রক্ষা করতে হবে। কারণ লোভী মানুষ কোথাও গেলে সে সবকিছু তছনছ করে ফেলে। আমার কোনো সমস্যা হবে না কারণ আমি দূরে থাকব। স্বার্থপর এবং লোভী মানুষগুলো খুব খারাপ। যখনি তাদের স্বার্থে কোন আঘাত লাগে তারা হট্টগোল বাঁধিয়ে দেয়। আপনারা সতর্ক থাকবেন। যখনি দেখবেন অসৎ মানুষগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের অপচয় করছে আপনারা তা প্রতিহত করবেন। এটাই আমার ঐকান্তিক ইচ্ছা।’

এরপর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'আমি কাউকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্প শুনাতে আসি নাই। ন্যায়সঙ্গত কাজ করতে এসেছি। চ্যালেঞ্জে যাবেন? যান, আসেন। আপনার জন্য সবজি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ঢাকায় যেতে হয়, সপ্তাহে ২-৩ বার ঢাকায় যেতে হয় আপনাকে সার্ভ করার জন্য। আপনাকে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত আপনি আমাকে অপমান করছেন, অপদস্থ করছেন। সহ্য করছি কিছু বলি নাই আপনাকে। আমাকে কর্মচারী ভেবেছেন আপনি? আপনার থেকে কম লেখাপড়া করেছি? আপনার থেকে কম গবেষণা জানি? আপনার সাথে আমি একদিনের জন্য উচ্চবাচ্য করিনি। দিনের পর দিন তিনি আমাকে ইনসাল্ট করেছেন। কেনো? আপনি আজকেও সেই একই কথা বলার চেষ্টা করেছেন।’

তিনি এসময় আরো বলেন, আপনিও সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা, আমিও সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা। আপনি কতদিন এখানে এসে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন? 

পারস্পরিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার এমন কিছু বলার প্রশ্নই আসে না। কোথায় বলবো আমি এসব। কেনো আমি এসব বলবো। আমি এমন কিছু বললে তো তোমাদের চোখ এড়াতো না।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, ট্রেজারারের গাড়ি ব্যবহার করা নিয়ে ভিসির সাথে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরবর্তীতে ট্রেজারারকে দীর্ঘদিন একটি পিকআপ ভ্যান ব্যবহার করতে দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে ভিসি-ট্রেজারের মধ্যে মনোমালিন্য ছিলো বলে জানা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ