চিরনিদ্রায় শায়িত ইডেনের শান্তা, হাসপাতালে বাবা-ভাই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৯, ১০:০৭ AM , আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০১৯, ১০:২৮ AM
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া রাজধানীর ইডেন কলেজের ছাত্রী ফাতেমো আক্তার শান্তার (২০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুরে তাদের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
শান্তার চাচা মো. নাসির উদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘তার দাফন শেষ হয়েছে। তার নিজ গ্রামের বাড়ি গাজিপুরের কাশিমপুরে তাকে দাফন করা হয়। সকাল নয়টায় তার জানাজার নামাজ এবং পরে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
রাজধানীর জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে রবিবার বিকালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। তার বাবা এবং ভাইও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
তার বাবা মৃত মেয়েকে দেখে হাসাপাতালে ভর্তির বিষয়ে চাচা জানান, শান্তার বাবা মো. শামছুদ্দিন এবং ভাই মো. তানভীর আহমেদ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আগেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শান্তাকে দেখার পর তারা আরো অসুস্থ হয়ে যান। তাদের শারীরিক অসুস্থতার কারণে শান্তার জানাজায়ও অংশ নিতে পারেননি।
ডেঙ্গু: মেয়ের নিথর দেহ দেখে বাবা হাসপাতালে
কলেজের একাউন্টিং বিভাগের শান্তার বান্ধবী তাকিয়া আক্তার দিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, ‘শান্তা এমনিতে ওর নামের মতই শান্ত, মিশুক এবং অনেক ভালো একটা মেয়ে ছিলো। ক্লাসে নিয়মিত আসত এবং কারো সাথে কোনো ঝামেলা ছিলো না তার। সবার সাথেই ফ্রেন্ডলি মনোভাব সম্পন্ন সম্পর্ক ছিলো তার। শান্তা অনেক হেল্পফুলও ছিলো।’
তিনি জানান, ‘আমাদের যেহেতু একাউন্টিং ডিপার্টমেন্ট সেহেতু ম্যাথের ব্যপারটা তো আছেই। যে কেউ কোনো ম্যাথ না বুঝলে ও সাথে সাথে সেটা পিক তুলে দিয়ে দিতো।সবচেয়ে বড় কথা হলো পাগলিটা কখনো কাউকে বুঝতেই দিতো না যে সে কষ্টে আছে। অসুস্থতার বিষয় শুনে আমরা তাকে কয়েকবার দেখতেও গিয়েছিলাম। কালকে তার মারা যাওয়ার খবর আমাদের অনেক ব্যথিত করেছে।’
ইডেন কলেজের একাউন্টিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন শান্তা। বাবা শামসুদ্দিন মিয়া পরিবারকে নিয়ে থাকতেন ঢাকার হাজারীবাগে। বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতেন শান্তা। তাদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জুলাইয়ের শুরু থেকে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পর পরিবারের সবাই আতঙ্কের মধ্যে ছিল। চারপাশে মৃত্যুর খবরে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য রক্ষায় জোরও দেয়া হয়েছিল।
এদিকে গত মঙ্গলবারে শান্তার হালকা জ্বর হয়। কিন্তু তেমন বেশি হয়নি। সুস্থও মনে হচ্ছিল তাকে। স্থানীয় ডাক্তারও দেখা হয়েছিল। কিন্তু জ্বর আর কমেনি। এবার বাবা-মায়ের চিন্তা বেড়ে গেল। আর দেরি না করে মেয়েকে নিয়ে আসা হলো জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে।
শনিবার হাসপাতালে ভর্তির পরেই তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তার শরীরের অবস্থা আর উন্নতি হচ্ছিল না। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার বিকালে শান্তা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে মৃত্যু বরণ করেন।
হাসপাতালের ম্যানেজার শহিদুল আলম রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, পাঁচদিন ধরে ডেঙ্গুতে জ্বরে আক্রান্ত ছিল শান্তা। গতকাল শনিবার তাকে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে হাসপাতালেই মৃত্যুবরণ করেন।