ছাত্রী হলের ক্যান্টিন ইস্যুতে হল প্রভোস্ট বললেন ‘জকসুকে সামনে রেখে কাঁদা ছোড়াছুড়ি’

জবি শিক্ষার্থী ইমু ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ছাত্রী হল
জবি শিক্ষার্থী ইমু ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ছাত্রী হল  © টিডিসি সম্পাদিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী ছাত্রী হলের ক্যান্টিনে খাবারে পোকা পাওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ককে ‘খুবই ছোট বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা। জকসু সামনে রেখেই এ কাঁদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে গতকাল রাতে, ‘জবি ক্যান্টিনে খাবারে পোকা, প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করলেন ছাত্রীসংস্থার নেত্রী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে কয়েকটি গণমাধ্যম। সেখানে দাবি করা হয়, ক্যান্টিনের খাবারে পোকা পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় ইমু নামে এক শিক্ষার্থী অন্য এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেন।

এদিকে, একই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হলের গেস্ট রুমে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘মানহানিকর’ বলে দাবি করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাতিমাতুজ্জোহরা ইমু।

ইমু বলেন, ‘হলের ক্যান্টিনে খাবারে পোকা পাওয়া নিয়ে আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। এটি আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা।’

‘ছাত্রী তোলা’ ও ‘ছাত্রী সংগঠনের নেতৃত্ব’ নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো নেত্রী নই। ছাত্রী সংগঠনের সামাজিক কর্মকাণ্ড ভালো লাগে বলে মাঝে মাঝে অংশ নিই। ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে হলে কেউ আর ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ পায় না, সবাই এখন সচেতন।’

ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে সংবাদে করা মন্তব্যকে ‘হলুদ সাংবাদিকতা’ বলে উল্লেখ করে ইমু বলেন, ‘আমার সম্পর্কে বলা হয়েছে আমি ছাত্রলীগের নেতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন সংবাদ নারী শিক্ষার্থীদের সম্মানহানি ঘটায় এবং নারী নেতৃত্বের বিকাশে বাধা দেয়।’

আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে হল সংসদের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা রয়েছে তার। ‘এই সংবাদ আমাকে জনসমক্ষে বিব্রত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার জন্য করা হয়েছে,’ বলেন ইমু।

এদিকে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী হল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদকে ‘ভিত্তিহীন ও মিথ্যা’ আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংবাদে যাকে নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ইমু’ নামের ওই শিক্ষার্থী সংগঠনের কর্মী নন।

এছাড়া আসন্ন জবি ছাত্রসংসদ নির্বাচনে উক্ত শিক্ষার্থীকে ‘হল ভিপি’ প্রার্থী বলা সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর ও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। ছাত্রীসংস্থা সংবাদে এমন অযাচিত ও যাচাইবিহীন তথ্য প্রকাশের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দুঃখপ্রকাশ ও সংবাদ সংশোধনের দাবি জানিয়েছে।

ফলে এনিয়ে সামগ্রিক বিষয়ে হল প্রভোস্ট আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘যেটা ঘটেছে এটা খুবই ছোট বিষয়, এটাকে টেনে বড় করা হয়েছে। লেনি আগেই ক্যান্টিনের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল। তবে জুনিয়র দেখে ওকে দেয়নি, ইমুকে দিয়েছি। ডিবেট করলে সাহস থাকে এজন্য ইমুকে দায়িত্ব দেয়া। এখানে সবার সাথে ডিল করারও একটি বিষয় আছে। তিনি বলেন, লেনির আগ্রহ আগেই ছিল। তবে লেনি যদি জকসুতে দাঁড়ায় তাহলে আমি তাকে দিব না। জকসু সামনে রেখেই এই কাঁদা ছোড়াছুড়ি।’


সর্বশেষ সংবাদ