প্রথমবারের মতো কুবিতে ইথিক্যাল বোর্ড গঠন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) গবেষণায় অগ্রগতি আনতে প্রথমবারের মতো ইথিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি গবেষণায় ব্যাবহৃত বিষয়বস্তুগুলোর অধিকার, নিরাপত্তা ও আইনগত বৈধতা নিশ্চিত করবে। বৃহস্পতিবার  'দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস' কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আনোয়ার হোসেন।  

তিনি বলেন, 'গবেষণায় উন্নয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সেবিষয়ে একটি অফিস আদেশ প্রদান করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষককে কমিটিতে রাখা হয়েছে যাতে গবেষণায় আরও ভালো করা যায়।'

সংশ্লিষ্ট শিক্ষকগণ বলছেন, প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান আরও বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। ইথিক্যাল বোর্ড গঠনের আগে গবেষণার গ্রহণযোগ্যতার জন্য কোনো প্রত্যয়নপত্র পাওয়া যেত না, এমনকি অনেক গবেষণা প্রকাশের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল এ কারনে। তবে বর্তমানে বোর্ড গঠনের মাধ্যমে গবেষকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং মানব, প্রাণী ও উদ্ভিদের অধিকার সুরক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি এটি গবেষককে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক শর্ত পূরণে সহায়তা করে এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।'

কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিরিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও গবেষক পার্থ চক্রবর্তী বলেন, 'ইথিক্যাল বোর্ড গঠন হওয়ার পূর্বে যখন আমরা রিসার্চ করতাম তখন রিসার্চের গ্রহণযোগ্যতার জন্য কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো প্রত্যয়নপত্র পেতাম না। একবার বিজ্ঞান বিষয়ক একটি রিসার্চ পাবলিশ করার চেষ্টা করেছিলাম তখন সেই গবেষণামূলক প্লাটফর্ম থেকে আমাকে বলেছিলো ইথিক্যাল বোর্ড থেকে একটি প্রত্যয়নপত্র সাবমিট করার জন্য কিন্তু করতে পারিনি। এখন যেহেতু ইথিক্যাল বোর্ড গঠন করে গবেষকদের জন্য একটি দ্বার উন্মোচন করা হয়েছে। গবেষণায় ব্যাবহার করা বিষয়াবলি হিউম্যান, এনিমেল এবং প্লান্ট রাইটস নিশ্চিত করতে এই বোর্ড কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।'

আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, 'রিসার্চের কোয়ালিটি এবং লিগ্যাল ভ্যালিডিটি তৈরির জন্য ইথিক্যাল সার্টিফিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় যেই রিসার্চ পাবলিশার প্লাটফর্মগুলো আছে সেগুলো একটি গবেষণা প্রকাশ করার জন্য ইথিক্যাল সার্টিফিকেটের রেফারেন্স চেক করে। আসলে এধরণের একটি প্রসেস না থাকলে রিসার্চের মোরালিটি ঠিক থাকে না। যার ফলে হিউম্যান রাইটস, এনিমেল রাইটস ভায়োলেট হতে পারে এবং রিসার্চের এক্সপেরিমেন্ট হিতে বিপরীত হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা আরও সমৃদ্ধ করতে এই বোর্ড ভালো অবদান রাখবে বলে মনে করি।

গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দীন বলেন, 'গবেষণায় কাজ ইম্প্রুভ করার জন্য একটি ইথিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বায়োলজিকাল রিসার্চ, এনিম্যাল রিসার্চ ও প্লান্ট রিসার্চসহ সবগুলো রিসার্চের জন্য আমাদের এই কমিটি থেকে একটি ইথিক্যাল সার্টিফিকেট দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহ দেয়ার জন্য ভালো ভূমিকা পালন করবে।'

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এটি গঠন করা উচিত। রিসার্চের জন্য আমরা যেই অবজেক্টগুলো ব্যবহার করি যেমন, এনিমেল, প্লান্টস, সোসাইটি সেগুলো অধিকার, নিরাপত্তা ও আইনি বৈধতা নিশ্চিত করার জন্যই এটি গঠন করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ