ইউজিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেরোবিতে আরও তিন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে তড়িঘড়ি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৫:১০ PM , আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৭:০২ PM
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা যেন তোয়াক্কাই করছেন না বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন। ইউজিসির স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও আবারও তা অমান্য করে আরও তিন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড আয়োজন করছেন বলে জানা গেছে। এর আগে আরো একটি বিভাগে নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগ দিতে গেলে চাপের মুখে সেই বোর্ডও দুই দিন আগে স্থগিত করেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ১৮ আগস্ট (সোমবার) ইইই বিভাগের অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষা ছুটির বিপরীতে নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও ২০ আগস্ট (বুধবার) গনিত বিভাগে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড এবং তার পরের দিন ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ও অস্থায়ী ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এই সবগুলো অস্থায়ী পদে নিয়োগ দিতে হলে ইউজিসির অনুমতির প্রয়োজন। ইউজিসির সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এরূপ কোন অনুমতি নেওয়া হয় নি।
ইউজিসির সুস্পষ্ট নির্দেশনা অমান্য করে উপাচার্য ড. শওকাত আলী একাই এসকল বোর্ডের তারিখ নির্ধারন করেন বলে জানা গেছে। ইউজিসির সূত্র জানায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য অনুসরনীয় গাইডলাইনসহ একটি পরিপত্র গত ২৮ মে ইউজিসি জারি করেন। ইউজিসির অর্থ, হিসাব ও বাজেট শাখার পরিচালক রেজাউল করিম হাওলাদার স্বাক্ষরিত সেই পরিপত্রে স্পষ্টভাবে খন্ডকালীন ও শিক্ষা ছুটির বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ না দিতে বলা হয়। আর শিক্ষক নিয়োগ দিলেও সেক্ষেত্রে অবশ্যই মঞ্জুরি কমিশনের পূর্বানুমিত নিতে হবে। অন্যথায় এ খাতে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হবে না বলেও পরিপত্রে সতর্ক করা হয়। এছাড়াও এ উপাচার্যে সময়ে দুইটি বিভাগের অস্থায়ী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও স্থগিত করার পরামর্শ দেয় ইউজিসি। উপাচার্য সেই নির্দেশনাও মানেন নি।
আরও পড়ুন: নর্দান ইউনিভার্সিটির ভিসি নিয়োগে টালবাহানা, একজন ইউজিসি সদস্যের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
এই পরিপত্র জারি সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইউজিসির পরিপত্রকে উপেক্ষা করে এর আগে সামাজ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষা ছুটির বিপরীতে একজন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদানের জন্য বোর্ডের তারিখ নির্ধারন করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তড়িঘড়ি করে সেই বোর্ড স্থগিত করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী এস এম আশিকুর রহমান বলেন,২৪-এর এই বিপ্লব ও রক্তঝরানো গণঅভ্যুত্থানের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগ কোনভাবেই কাম্য নয়। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতি চরম অবমাননা নয়, বরং দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য একটি বড় হুমকি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং স্পষ্টভাবে প্রশাসনকে বলতে চাই, ২৪-পরবর্তী সময়েও যদি আপনারা স্বৈরাচারের মতো নিয়োগ বাণিজ্য এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন তবে তা রুখে দিতে আমরা ছাত্রজনতা প্রস্তুত। প্রয়োজনে সব অন্যায় এবং দুর্নীতিকে রুখে দিতে আবারও রাজপথে নামবো, তবুও কোন অন্যায়, দুর্নীতির স্থান এই বেরোবিতে হতে দেবো না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. শওকত আলী বলেন, আমি অনেক আগেই সার্কুলার দিয়েছিলাম। পরে ২৮ মে ইউজিসি পরিপত্র জারি করেছে। এটা বোর্ড গঠন চূড়ান্ত নয়। সিন্ডিকেটে পাসের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।
ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন বলেন, ‘খণ্ডকালীন বা পূর্ণকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হয়। যা ইউজিসির আইনে বলা আছে। আমি বিষয়টি দেখছি।’