‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ চান তিতুমীরের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী

সরকারি তিতুমীর কলেজ
সরকারি তিতুমীর কলেজ  © সংগৃহীত

সরকারি তিতুমীর কলেজকে ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ হিসেবে চান কলেজটির ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর ‘স্বতন্ত্র তিতুমীর কলেজ’ হিসেবে চান ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। ফেসবুকে একটি জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

‘সেন্ট্রালের সমর্থক তিতুমীরিয়ান’ নামে একটি ফেসবুক পেজে এ জরিপ চালানো হয়। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই চিত্র দেখা গেছে।

পেজটিতে আরও দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ সদ্যস্য যুক্ত হয়েছেন। এটি অ্যাডমিন হিসেবে পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রকিবুল ইসলাম সৈকত এবং এমএন মানিক খান নামে দুজন। এ ছাড়া ‘সেন্ট্রাল সাপোটার্স তিতুমীরিয়ান’ নামে একটি পেজও দেখা গেছে।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। তারা এ বিষয়ে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন সরকারের কাছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি এখনো। শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নানা আশ্বাসেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যান। তাদের দাবি ছিল দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিতে হবে।

আরও পড়ুন : যে সাফল্য নিয়ে জাপান যাচ্ছেন মাভাবিপ্রবির দুই বন্ধু

দিন দিন তারা আন্দোলন জোরদার ও সড়ক অবরোধের কারণে রাজধানীতে যান চলাচল ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এতে নানা সমালোচনা শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কঠোর অবস্থান নেয়।

এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একগুচ্ছ আশ্বাসে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সাত দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।

গত সোমবার ৯টা ৩৬ মিনিটে মহাখালী রেলক্রসিংয়ে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যের’ নেতা ও অনশনরত শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম। গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা অনশন প্রত্যাহার করছি।’

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী নায়েক নূর বলেন, ‘আমরা আন্দোলন সাত দিনের জন্য স্থগিত করছি। মন্ত্রণালয় যেসব আশ্বাস দিয়েছে তা বাস্তবায়নে কার্যকর অগ্রগতি না দেখলে আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।’

আরও পড়ুন : বেরোবির ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার অবহিত রয়েছে। এই মর্মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো যাচ্ছে যে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে এই কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য এবং এ ক্ষেত্রে করণীয় সব বিকল্পই সরকারের বিবেচনায় থাকবে।

এ অবস্থায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই। সে জন্য আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করা হলো। জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়, এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ