জুলাই হামলা ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড

বেরোবির তদন্ত প্রতিবেদন ২৮ অক্টোবর, শতাধিক ব্যক্তি লাপাত্তা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জুলাই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী লাপাত্তা রয়েছেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক, চার কর্মকর্তা, চার কর্মচারী এবং ৮০ জনের অধিক শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে আসতে দেখা যায়নি। এরইমধ্যে আগামী সোমবার (২৮ অক্টোবর) সিন্ডিকেট সভায় আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী পরীক্ষা দিতে রংপুরে আসেন। তবে তাদের জন্য একাডেমিক ভবনের সামনে জুতার মালা রাখার খবর শুনে ক্যাম্পাসে আসার সাহস পাননি।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী পরীক্ষা দিতে রংপুরে আসেন। তবে তাদের জন্য একাডেমিক ভবনের সামনে জুতার মালা রাখার খবর শুনে ক্যাম্পাসে আসার সাহস পাননি।

গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এ সময় পুলিশসহ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক, চার কর্মকর্তা এবং ৫ কর্মচারীকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান করতে দেখা যায়। 

সেদিন তাদের হামলায় আহত হন সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। আবু সাঈদ নিহতের খবরে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। তখন তাদের পাল্টা ধাওয়ায় হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং গ্যারেজের পেছনের দেয়াল টপকে পালান।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তালিকা অনুযায়ী, হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা দুই শিক্ষক হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিয়ার রহমান এবং লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল। চার কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন- রাফিউল হাসান রাসেল, তৌহিদুল জনি, হাফিজুর রহমান তুফান এবং মনিরুজ্জামান পলাশ। চার কর্মচারী হলেন-নুরুন্নবী, আশিকুন্নাহার টুকটুকি ও আমির হোসেন আমু ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা ৬৯ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসন বরাবর জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন- বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহ-সভাপতি বিধান বর্মন, মো. রেজওয়ান-উল-আনাম তন্ময়, মো. তানভীর আহমেদ, মো. শাহীন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাকিব-আল-হাসান, ধনঞ্জয় কুমার দাস টগর, মো. সেজান আহমেদ আরিফ, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সুদীপ্ত সরকার বাধন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মেজবাউল সরকার জয়, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান প্রমুখ।

জানা গেছে, আবু সাঈদ হত্যা এবং অনেকে আহত হওয়ার ঘটনায় দু’বার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রথম কমিটি তদন্ত সম্পন্ন না করেই পদত্যাগ করে। পরবর্তী কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বললেও মাস পেরোনোর পরও তা প্রকাশিত হয়নি। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে থাকা বেরোবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কয়েকজন শিক্ষক স্বৈরাচার সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে নেমেছিল। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ছাত্রত্ব বাতিল ও নিয়োগ বাতিলের দাবি জানান তারা। আবু সাঈদ হত্যার আড়াই মাসে দু’বার তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও প্রতিবেদন না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে তালিকায় নাম আসা ও ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তারা সবাই গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন: হাসনাত-সারজিসের রংপুর সফরের খবরে উত্তেজনা, বিক্ষোভ জাপার

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, প্রথম তদন্ত কমিটির সময়ে তিনি ছিলেন না। তবে তিনি উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর অপরাধীদের শনাক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিদের কাছে তথ্য চেয়েছেন। কিন্তু তারা অপরাধীদের সঠিকভাবে শনাক্ত করতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য বাড়তি সময় চেয়ে নিয়েছিল।

সবমিলিয়ে সাত কর্মদিবসের বেশি সময় লেগেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে তার কোনও গাফিলতি ছিল না। গত সিন্ডিকেট সভায় তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ২৮ অক্টোবর সিন্ডিকেট সভা আছে। এ সময় সাংবাদিক ডেকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence