পুলিশের গুলিতে নয়, দুর্বৃত্তের ইটপাটকেলে সাঈদের মৃত্যু: এজাহার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫২ AM , আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫২ AM
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ১১ দিনেও জমা দেননি চিকিৎসক। তার মৃত্যুর ঘটনায় তাজহাট থানায় একটি মামলা করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বিভূতিভূষণ রায়।
ঘটনার পরদিন পেনাল কোডের (১৪৩/১৮/৬/৩৩২/ ৩৩৩/৩৫৩/৩৭৯/৪৩৫/ ৪২৭/৩০২/৩৪) ধারায় মামলাটি করা হয়। এজাহারে গুলিতে সাঈদ মারা গেছেন—এমন কোনও তথ্য নেই। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইটপাটকেলের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। আসামি হিসেবে কারও নাম নেই। অজ্ঞাত দুই-তিন হাজার আন্দোলনকারীকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পরস্পর যোগসাজশে বেআইনি জনতা সাধারণ/মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করে গুরুতর জখম, চুরি, ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন, অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ ছাত্রকে হত্যা করার মতো অপরাধ করেছে। উচ্ছৃঙ্খল দুই-তিন হাজার আন্দোলনকারী ছাত্র নামধারী দুর্বৃত্ত, তাদের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির সমর্থিত নেতাকর্মীও রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের মারপিট করে মারাত্মক আহত করে তারা।
‘‘সড়ক অবরোধে থাকা উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজন সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্ত বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য থেকে কং/১১৮৬ সোহেল নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান থেকে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। সংঘর্ষে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।’’
এতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন তার সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে চিকিৎসার জন্য বিকাল ৩টা ৫ মিনিটের দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত ছাত্রের নাম আবু সাঈদ (২৩), বাবা মকবুল হোসেন, গ্রাম জাফরপাড়া বাবনপুর, থানা পীরগঞ্জ, জেলা রংপুর।
এজাহারে পুলিশের গুলিতে সাঈদের মৃত্যুর তথ্য না থাকলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের ছোঁড়া গুলি আবু সাঈদের দেহে লাগে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি দু হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছেন। আর উল্টো দিক থেকে পুলিশ শটগান থেকে গুলি ছুঁড়ছে। এক পর্যায়ে সাঈদ গুলিবিদ্ধ হলে অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ১৬ জুলাই আবু সাঈদ গুলিতে নিহত হওবার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিলো। পরে ১৮ ও ১৯ জুলাই সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো, যার জের ধরে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছিলো কর্তৃপক্ষ।