শুদ্ধাচার বাস্তবায়নে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ: খুবি উপাচার্য

শুদ্ধাচার সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন খুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন
শুদ্ধাচার সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন খুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন  © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এপিএ’র আওতায় আবশ্যকীয় কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে শুদ্ধাচার সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, শুদ্ধাচার বাস্তবায়নে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষকে সুশৃঙ্খল ও সমাজবদ্ধ রাখতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি। একজন কর্মী যখন নিজের যোগ্যতা ও কাজের মূল্যায়ন না পান তখন তার ওপর নেমে আসে হতাশা। এক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এখন একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। এখানে কর্মরত সকলেই এখন উদ্যোগী হয়ে নির্ভয়ে কাজ করতে পারছেন, সেই পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখানকার পরিবেশগত পরিবর্তন নিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে মডেল হিসেবে দেখছে।

তিনি বলেন, শুদ্ধাচার শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে না; এটি নির্ভর করে পুরো সিস্টেমের ওপর। একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করাই হলো দেশের জন্য কাজ করা। প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন হলে সামগ্রিকভাবে দেশেও শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন হবে। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করাই হলো শুদ্ধাচার। প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা বিরাজমান করতে বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করেছে। দক্ষ ও দেশপ্রেমিক জনশক্তি করতে এবং একটি প্রতিষ্ঠানকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে শুদ্ধাচার প্রয়োজন। অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার ইচ্ছা পরিহার করতে শুদ্ধাচারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

উপাচার্য আরও বলেন, খুবই অল্প সময়ের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি সম্মিলিত কর্মদক্ষতার প্রমাণ। একটি প্রতিষ্ঠানের সকলের কর্মদক্ষতা এক নয়, এটি আমরা উপলব্ধি করি। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে তাদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

আরও পড়ুন: কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছে শেকৃবি: উপাচার্য

উপাচার্য কর্মদক্ষতা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিয়ে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করে নিজের কাজ যথাযথভাবে সম্পাদন করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা কমিটির ফোকাল পয়েন্ট প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রশাসন শাখার প্রধান উপ-রেজিস্ট্রার দীপক চন্দ্র মন্ডল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেকশন অফিসার সোনিয়া আক্তার।

এসময় আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. কাজী মাসুদুল আলম, অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক শেখ মুজিবুর রহমান, অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) এস এম মনিরুজ্জামান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. খায়রুল বাসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টেকনিক্যাল সেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. ইয়ামিন কবীর ও শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা কমিটির বিকল্প ফোকাল পয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার এস এম আবু নাসের ফারুক। মতবিনিময় সভায় সকল ডিন অফিস, ডিসিপ্লিন, হল, দপ্তর, বিভাগ, শাখা থেকে একজন করে ৩য় শ্রেণির কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। এসময় এপিএ, সিটিজেন চার্টার, ই-গভর্ন্যান্স, তথ্য অধিকার, জিআরএস কমিটির সংশ্লিষ্ট ফোকাল পয়েন্ট ও বিকল্প ফোকাল পয়েন্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ