কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর

কুবিসাস কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর
কুবিসাস কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর  © টিডিসি ফটো

রাতের আঁধারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৩ জুন) দিবাগত রাতে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ১৪ নং কক্ষে এ হামলা চালায়।

সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা জানান, সংবাদ প্রকাশের জেরে বেশ ক’দিন ধরেই সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল ২০১৭ সালে শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহি ও তার অনুসারীরা। ২৯ মে রেজা নিজেই প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকরা এখনও আমাকে চিনে না, আমি কে?’, ‘এই ক্যাম্পাস কারো বাপের না’, ‘সাংবাদিকরা আমাদের কী করবে দেখে নেব’ ও ‘গুন্ডামির কী দেখছে’ ইত্যাদি বলে সাংবাদিকদের হুমকি দেন ও তাদের দিকে মারধরের ভঙ্গিতে তেড়ে আসেন।

এ ঘটনার পর তার অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে সরাসরি হুমকি দিয়ে আসছিলেন সংবাদকর্মীদের। এদের মধ্যে ছিলেন রেজা-ই -এলাহি সমর্থিত মাহি হাসনাইন, মুমিন শুভ, নূর উদ্দিন হোসাইন, স্বজন বরণ বিশ্বাস, আমিনুর বিশ্বাস, রাকিব হোসাইন, সাদ্দাম হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল কাফি, দ্বীপ চৌধুরী, রাকেশ দাস, রাশেদ ইবনে নূর, এস.কে মাসুম, নওশিন আল ইসলামসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

এর মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী এস কে মাছুম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, "ডিরেক্ট একশন হবে এখন থেকে"। লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থ মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, "সাংবাদিকদের এক এক করে ধরে কালার পাল্টে লাল করে দিব, এরা দেশ ও জাতির শত্রু"।

এদিকে অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় প্রশাসন বরাবর লিখিত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা। 

এ বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহা. মহিউদ্দিন মাহি বলেন, ‘সকাল সোয়া ১১টার দিকে আমার সহকর্মীরা অফিস ভাঙচুরের বিষয়টি দেখে আমাকে ফোন দিলে আমি প্রশাসনকে জানাই। এরপর প্রক্টরিয়াল টিম আসলে তাদের নিয়ে আমরা অফিসে প্রবেশ করি। বেশ ক’দিন ধরেই রেজা-ই-এলাহি ও স্বজন বরণ বিশ্বাস নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের অংশ আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। আজ তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। আমরা এ হামলার দ্রুত বিচার চাই।’

তবে হুমকি ও ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহি বলেন, এ ঘটনায় আমি বা আমার অনুসারী কেউ জড়িত নয়।

একই বিষয়ে স্বজন বরণ বিশ্বাসের মন্তব্য জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোনকল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাদের থেকে অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, 'আমি প্রক্টরকে নির্দেশনা দিয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, 'ছাত্রলীগ যারা করে তারা এ ধরনের অনৈতিক কাজ করতে পারে না। ছাত্রলীগ কর্মীদের এধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। বিশৃঙ্খলার কারণেই এখানে (কুবি) ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। সুতরাং ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কারও এখানে অপকর্মে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।'

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে একটি জাতীয় দৈনিকের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে হেনস্তা করে রেজা-ই-এলাহি, স্বজন বরণ বিশ্বাস ও তাদের অনুসারীরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence