ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্টের আদেশ কাল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৩১ PM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৩১ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম-কানুন দেখে আগামীকাল বুধবার আদেশ দেবে হাইকোর্ট। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে আজ মঙ্গলবার দাখিল করা হয়; ওই দুই প্রতিবেদন দেখে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য দিন ঠিক করে।
এ সময় আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন গাজী মো. মোহসিন, আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পরে আইনজীবী মোহসিন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতেরে নির্দেশে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই দুটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে এসেছে। প্রতিবেদনে লিখিত স্টেটমেন্ট, অডিও ক্লিপও জমা দিয়েছেন। অভিযুক্ত অন্তরা, তাবাসসুম, লিমা, মীম, উর্মি ও মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, জুডিসিয়ারি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই হলের প্রভোস্ট, হাউজ টিউটোরদের দায়িত্বে চরম অবহেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থ হয়েছেন। হলের প্রভোস্টের সামনে এই ঘটনা ঘটার পরও তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। বরং তিনি অভিযুক্তদেরকেই সহযোগিতা করেছেন। তিনি নির্যাতনের শিকার ছাত্রীকে কোনো সহযোগিতা করেননি।
এই আইনজীবী আরও বলেন, জুডিসিয়ারি রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উদাসিনতার বিষয়টি উঠে এসেছে। তিনি অভিযোগ পাওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আদালত তদন্ত রিপোর্ট দেখে আদেশ দেবে।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইবির সাবেক শিক্ষার্থী গাজী মো. মহসীন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দিয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন, নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ওই নির্যাতনে জড়িত বলে ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী ও তাবাসসুম নামের যে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে রাখাসহ কয়েক দফা নির্দেশ দেন।
তিন সদস্যের কমিটিতে প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা, জেলা জজ মনোনীত বিচার বিভাগীয় একজন কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপককে রাখতে বলা হয়। কমিটির প্রতিবেদন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে জমা দিতে বলা হয়। এছাড়া ওই ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির প্রতিবেদনও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় আজ পৃথক প্রতিবেদন সিলগালা অবস্থায় আদালতে দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। পরে আদালতে প্রতিবেদন দুটির অংশবিশেষ পড়ে শোনান তিনি। রিটের পক্ষে গাজী মো. মহসীন শুনানিতে ছিলেন।