বেরোবিতে ৬ বছরে গবেষণা বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৩৯ PM , আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২:৪৩ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গত ছয় বছরে গবেষণা বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি। দিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা পত্র উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হচ্ছে। প্রশাসনের সার্বিক ও আর্থিক সহযোগীতাকে গবেষণা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন গবেষকরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে আরও বেশি বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
বুক রিভিউ,জার্নাল এবং কনফারেন্স পেপার সম্পর্কিত সাইটেশনের উপাত্ত নিয়ে কাজ করা স্কোপাসের তথ্য পর্যালোচনায় জানা যায়, এখন পর্যন্ত স্কোপাস ইনডেক্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রকাশিত মোট গবেষণা পত্রের সংখ্যা ৫৩২টি। ২০১৭ সালে ২৯টি, ২০১৮ সালে ২৯টি, ২০১৯ সালে ৪৯টি, ২০২০ সালে ৭৫টি, ২০২১ সালে ১৪৪টি এবং সর্বশেষ ২০২২ সালে ১৫৭টি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়। এই হিসাব অনুসারে গত ছয় বছরে গবেষণা বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২১৫টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আবু রেজা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম। অপরদিকে ৩৩টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান। তৃতীয় অবস্থানে থাকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রুকাইয়া ইসলামের প্রকাশিত গবেষণার সংখ্যা ২৯টি। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ ফেরদৌস রহমান ২৬টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করে তালিকার চতুর্থ অবস্থানে আছেন।
আরও পড়ুন: হেরে গেলেন হিরো আলম
এছাড়া পঞ্চম অবস্থানে থাকা পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ শাহ্জামানের প্রকাশিত গবেষণা পত্র ২৩টি। ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা ফাইনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোঃ নুর আলম সিদ্দিক। তার প্রকাশিত গবেষণা পত্র ১৯টি। ৭ম অবস্থানে থাকা পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সিদ্দিকুর রহমান তার প্রকাশিত গবেষণা পত্র ১১টি।
১০ অক্টোবর২০২২ আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বিখ্যাত জার্নাল এলসেভিয়ার বিজ্ঞানীদের প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচক বিশ্লেষণ করে প্রস্তুতকৃত বিশ্বসেরা ২ শতাংশ বিজ্ঞান গবেষনা তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ১৪২ শিক্ষকের মধ্যে বেরোবি দুই শিক্ষক। তারা হলেন- জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু রেজা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান যথাক্রমে ৪০তম ও ৮৯তম এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অবস্থান যথাক্রমে ৭০৮ ও ৫৭১৩ তম।
সম্প্রতি উচ্চশিক্ষায় গবেষণা সহযোগিতা প্রকল্প ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ (এনএসটি) পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ শিক্ষার্থী। তাদেরকে গবেষণার জন্য ৫৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
গবেষণা বিষয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক গবেষক ড. কামরুজ্জামান বলেন, বর্তমান যুগে তাল মেলানোর জন্য আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশে ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে সুনাম অর্জন করতে পারে এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আমার শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহ উদ্দীপনা জোগাই।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরই সবার জন্য উন্মুক্ত গ্রন্থমেলা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. আবু রেজা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, গুণগত গবেষণার মাধ্যমে গবেষকের গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়। ভালো লাগার জায়গা হল গবেষণায় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং বাড়ানোর জন্য গবেষণার কোন বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে আশা রাখি।
গবেষণা সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক ড. তানজিউল ইসলাম জানান, আমাদের শিক্ষকরা গবেষণায় অনেক এগিয়ে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদেরও গবেষণায় আগ্রহ বেড়েছে। বাজেট বাড়ানো উচিত।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট মুক্ত করার পাশাপাশি গবেষণায় বেশ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মান সম্মত শিক্ষা ও গবেষণায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আগামী অর্থবছর থেকে গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।