বিসিএস প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় আধুনিক লকার, থাকছে না কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা

সরকারি কর্ম কমিশন
সরকারি কর্ম কমিশন  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরিতে নিরাপত্তা জোরদারে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এবার প্রশ্ন সংরক্ষণে ব্যবহার করা হবে আধুনিক লকিং সিস্টেমযুক্ত লকার বা ট্রাঙ্ক। পাশাপাশি প্রশ্ন তৈরির প্রক্রিয়া থেকে পিএসসির কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতাও বাদ দেওয়া হয়েছে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক, যুগ্মসচিব বা তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এসব প্রশ্নকারক নির্ধারিত দিনে কমিশনে উপস্থিত হবেন। ভবনে প্রবেশের আগে তাদের মোবাইল ফোন, মানিব্যাগসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত সামগ্রী ভবনের বাইরের নির্ধারিত বক্সে রাখতে হয়। এরপর নির্ধারিত কক্ষে বসে তাঁরা নিজ হাতে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন।

প্রশ্নপত্র লেখা শেষে তা একটি খামে সিলগালা করে জমা দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যের কাছে। এরপর সেই প্রশ্নপত্র নিরাপত্তার জন্য পিএসসির ভল্টে সংরক্ষণ করা হয়। পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময়ে সেই প্রশ্নপত্র ছাপা হয়। তবে খামে প্রশ্নপত্র রাখায় কিছুটা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া এগুলো বহনের ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পৃক্ততা থেকে যাচ্ছে। এজন্য আধুনিক লকার ব্যবহারের পথে হাঁটছে পিএসসি।

পিএসসি জানিয়েছে, পূর্বে প্রশ্ন তৈরি থেকে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় কমিশনের কর্মকর্তারা সরাসরি যুক্ত থাকলেও, বর্তমানে কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা সীমিত করে কেবল দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের হাতেই সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থার অংশ হিসেবে, প্রশ্নপত্র সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত প্রচলিত ট্রাঙ্ক বা লকার বদলে ফেলা হচ্ছে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন থেকে আধুনিক লকযুক্ত ট্রাঙ্ক ব্যবহার করা হবে, যেখানে পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করবেন প্রশ্ন মডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি। মডারেশন শেষে প্রশ্ন জমা দেওয়ার আগে পাসওয়ার্ড দিয়ে সেটি সদস্যের কাছে জমা দিতে হবে। ট্রাঙ্কের পাসওয়ার্ড যে কাগজে লেখা হবে, সেটি সিলগালা অবস্থায় সদস্যের কাছে জমা দেওয়া হবে।

পিএসসি বলছে, নিরাপত্তা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা রক্ষা করতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই নতুন উদ্যোগ প্রশ্নপত্র ফাঁসের যেকোনো আশঙ্কা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন তারা।

পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক  মোবাশ্বের মোনেম জানান, প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। বর্তমানে যে ট্রাঙ্কগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো পরিবর্তন করা হবে। ডিজিটাল পাসওয়ার্ড নির্ভর আধুনিক ট্রাঙ্ক ব্যবহার করা হবে। ট্রাঙ্কে পাসওয়ার্ড দেবেন মডারেটরই। এরপর তারা আলাদা কাগজে পাসওয়ার্ড লিখে তা সরাসরি পিএসসির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যের হাতে তুলে দেবেন। পাসওয়ার্ডের কাগজটিও সিলগালা করা থাকবে। এর ফলে প্রশ্ন ব্যবস্থাপনায় পিএসসির কোনো কর্মকর্তার সরাসরি সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত পিএসসির সদস্যরা একেবারে শেষ মুহূর্তে অনুমোদন সাপেক্ষে পাসওয়ার্ডের খামটি খুলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। 


সর্বশেষ সংবাদ