একবার প্রিলি-লিখিত পাস করলেই তিনবার ভাইভার সুযোগ, নতুন চিন্তা পিএসসির

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষা আরও সহজ করতে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একবার বিসিএসের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের তিনবার মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) সুযোগ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।

আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পিএসসি’র একটি দায়িত্বশীল সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে দুই ধরনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো- একজন প্রার্থী একবার বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তিনি তিনবার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তাকে পুনরায় প্রিলিতে অংশগ্রহণ করতে হবে না।

দ্বিতীয় পরিকল্পনা হলো- একজন প্রার্থী বিসিএসের প্রিলি এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তাকে তিনবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। তাকে নতুন করে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে না। এমনকি নতুন করে আবেদন করারও প্রয়োজন হবে না। পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে ৪৮তম বিসিএস থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে পিএসসি’র শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদনের সময় একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। এই আইডির মাধ্যমে প্রার্থীরা তাদের সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র অনলাইনে জমা দেবেন। এর ফলে প্রার্থীর ডাটা পিএসসি’র সার্ভারে জমা থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো প্রার্থী প্রিলিতে উত্তীর্ণ হলে সেই ডাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে তিনি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সেটিও হালনাগাদ হবে। প্রার্থী যে কোনো সময় আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করে তার তথ্য দেখতে পারবেন। এই আইডির মাধ্যমেই একজন প্রার্থী প্রিলিতে কিংবা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কি না সেটি জানা যাবে।’

জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। এগুলো এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। কমিশনের বিজ্ঞ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই সব চূড়ান্ত করা হবে। যা কিছু করা হবে, সব চাকরিপ্রার্থীদের কল্যাণেই করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিসিএস পরীক্ষার নম্বর দেখা ও খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ পেতে পারেন প্রার্থীরা

বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দেখার সুযোগ থাকলেও প্রিলি ও ভাইভার নম্বর দেখা সুযোগ ছিল না এতো দিন। তবে এবার সব পরীক্ষার নম্বর দেখার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিসিএসের তিনটি ধাপ সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রার্থীরা পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দেখতে পারবেন। এছাড়া প্রার্থীরা পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগও পেতে পারেন বলে জানা গেছে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বিসিএস পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর নিয়ে প্রার্থীদের অনেক আগ্রহ রয়েছে। প্রিলি ও ভাইভার চাকরিপ্রার্থীদের আগ্রহের কারণে বিসিএস পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দেখার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর প্রার্থীদের নম্বর দেখানোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কমিশনে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

প্রার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে পরীক্ষায় ভালো করেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি বলে অভিযোগ জানান। ফলে অনেকেই তখন পিএসসিকে দোষারোপ করেন। এটি বন্ধে প্রার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। তবে বিষয়টি কমিশনের সভায় চূড়ান্ত হবে।’

একজন পরীক্ষকের মাধ্যমে খাতা মূল্যায়নের পরিকল্পনা

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ক্যাডার পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার খাতা একজন পরীক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে চায় পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনাও করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘বর্তমানে তিনজন পরীক্ষক বিসিএসের ক্যাডার পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করেন। প্রথম পরীক্ষকের মূল্যায়ন শেষে একই খাতা দ্বিতীয় পরীক্ষকের কাছে যায়। এরপর নম্বরের ব্যবধান থাকলে খাতাগুলো তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানো হয়। এতে করে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়। বিসিএসের জট না খোলার অন্যতম কারণ এটি। এজন্য একজন পরীক্ষকের মাধ্যমে খাতা মূল্যায়নের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।’

একজন পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন করলে অনেকে বঞ্চিত হতে পারেন, কেউ কেউ বেশি নম্বরও পেতে পারেন। এ থেকে কীভাবে বের হবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও অনুধাবন করেছি। সেজন্য পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন শেষে যখন পিএসসিতে জমা দেবেন, তখন আমরা সেগুলো যাচাই করে দেখবো। পরীক্ষক নম্বর ঠিকভাবে দিয়েছেন কি না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পরই নম্বর চূড়ান্ত করা হবে।’

নন-ক্যাডারের পরীক্ষার মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম জানান, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা নন-ক্যাডারের যে পরীক্ষাগুলো লিখিতভাবে নেওয়া হয়, সেগুলোতে এটি প্রয়োগ করবো। অর্থাৎ আগে নন-ক্যাডারের খাতা একজন পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। নন-ক্যাডারের ক্ষেত্রে সফলতা আসলে পরবর্তীতে ক্যাডার পদের পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োগ করা হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence