৪৩তম বিসিএস

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জেলাপ্রীতিও দূর করতে সতর্ক পিএসসি 

সরকারি লোগো
সরকারি লোগো  © ফাইল ছবি

৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে। এ পরীক্ষায় প্রার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন সেই প্রশ্ন করতে পরীক্ষকদের নিষেধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলাপ্রীতি দূর করতেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

জানা গেছে, বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষাকে গ্রহণযোগ্য করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। যখন ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হত, তখন পরীক্ষকদের সামনে প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষার নম্বরও থাকত। তবে বর্তমানে সেই সুযোগ বন্ধ করেছে সংস্থাটি। তারপরও প্রিয়জনপ্রীতির নানা অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের।

অভিযোগ রয়েছে, নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা নিজ জেলার প্রার্থী পেলে অনেক পরীক্ষক পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন; যা একজন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে সুপারিশ পেতে সহযোগিতা করে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়প্রীতি এবং জেলাপ্রীতি দূর করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

লিখিত, মৌখিক বা প্রিলিমিনারিতেও সংস্কার হচ্ছে। আরও কিছু বিষয়ের মতো মৌখিক পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, এমনকি জেলার নামও জানতে চাওয়া যাবে না। পরীক্ষকরা চাকরিপ্রার্থীর রোল নম্বর ছাড়া কিছুই জানতে চাইবেন না। যারা ভাইভা বোর্ডে রয়েছেন তাদের সাথে কোনো প্রার্থীর জেলা মিলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীর ভাইভা বোর্ড পরিবর্তন করা হচ্ছে—পিএসসি চেয়ারম্যান

পিএসসি’র একটি সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, ৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় কোনো প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না। একই সাথে পরীক্ষকের নিজ জেলার প্রার্থীদের অন্য পরীক্ষকের বোর্ডে মৌখিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসি’র এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষকদের একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনার পাশাপাশি কোনো পরীক্ষকের সাথে প্রার্থীর জেলা মিলে গেলে তাকে অন্য পরীক্ষকের বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে। এজন্য পিএসসি চেয়ারম্যান প্রতিদিন প্রার্থীদের জেলার সাথে পরীক্ষকদের জেলার মিল রয়েছে কি না তা যাচাই করছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা পুরো পরীক্ষা পদ্ধতিতেই সংস্কার আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লিখিত, মৌখিক বা প্রিলিমিনারিতেও সংস্কার হচ্ছে। আরও কিছু বিষয়ের মতো মৌখিক পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, এমনকি জেলার নামও জানতে চাওয়া যাবে না। পরীক্ষকরা চাকরিপ্রার্থীর রোল নম্বর ছাড়া কিছুই জানতে চাইবেন না। যারা ভাইভা বোর্ডে রয়েছেন তাদের সাথে কোনো প্রার্থীর জেলা মিলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীর ভাইভা বোর্ড পরিবর্তন করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল সোমবার ৪৩তম বিসিএসের ৩১ কার্যদিবসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ৩১ কার্যদিবসে ৫ হাজার ৫৮৫ জনের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া শেষ করেছে পিএসসি। আরও ৪ হাজার ২০০ এর অধিক প্রার্থীর ভাইভা বাকি রয়েছে।

৪৩তম বিসিএসের অর্ধেকের বেশি প্রার্থীর ভাইভা নেওয়া শেষ হয়েছে। বাকিদের ভাইভাও দ্রুত শেষ করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের শেষ দিকে এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে—পিএসসি চেয়ারম্যান

পিএসসির একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে ৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করা হবে। এরপর নম্বর ইনপুট দেওয়াসহ অন্য কাজ করতে সাতদিন সময় নেওয়া হবে। নম্বর গণনায় কোনো সমস্যা দেখা না দিলে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ৪৩তম বিসিএসের অর্ধেকের বেশি প্রার্থীর ভাইভা নেওয়া শেষ হয়েছে। বাকিদের ভাইভাও দ্রুত শেষ করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে নভেম্বরের শেষ দিকে এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হতে পারে। 

২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের জুলাই মাসে লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। গত ২০ আগস্ট লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৪১ জন। 

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারে ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ ও সমবায়ে ১৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ