বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে

শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন
শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন  © ফাইল ছবি

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন এক আইনজীবী।

বিচারপতি মো. মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিষয়টি নজরে আনেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব। এ বিষয়ে শুনানির জন্য দুপুর আড়াইটায় সময় রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আদালতের নজরে আনা পল্লব বলেন, ‘বিষয়টি আমি আদালতের নজরে এনেছি। আদালত দুপুর আড়াইটায় শুনবে। এর মধ্যে আমরা রিট ফাইল করে দেবো। রিটে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে।’

তবে ইতোমধ্যে এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী অপসারণ বা পদত্যাগের দাবিতে আজ বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-১ এ আমরণ অনশন শুরু করে।

এ বিষয়ে এর আগে ভুক্তভোগী ছাত্ররা জানায়, গত রবিবার দুপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন আগে থেকে কাঁচি হাতে পরীক্ষার হলের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশের সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের মাথার সামনের অংশের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এভাবে একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এরপর পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের পরিবার তুলে গালিগালাজ করেন।

এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ব্যাপক ভাইরাল হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিনকে তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকি দেন। 

এতে ভয়ে তুহিন সোমবার রাত ৭টার দিকে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঘুমের বড়ি সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রাত ৮টার দিকে তার সহপাঠিরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকের কলেজে নিয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছুটে এসে বিক্ষোভ করেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের এ বিক্ষোভ চলে। পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে।


সর্বশেষ সংবাদ