অভিবাসীদের অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকরী পন্থা অনুসন্ধানে গবেষণা নর্থ সাউথের দুই শিক্ষকের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৪ PM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩৮ PM
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. রিজওয়ানুল ইসলাম এবং প্রভাষক নাফিজ আহমেদ অভিবাসীদের অভিযোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য কার্যকরী পন্থা অনুসন্ধান করার লক্ষ্যে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন। শনিবার (২৩ মার্চ) এনএসইউতে এক অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সুইজারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে হেলভেটাস বাংলাদেশ সিমস প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে যার আওতায় জিএমসি এর তত্ত্বাবধানে মধ্যস্থতার মাধ্যমে অভিবাসী কর্মীদের সাথে সম্পর্কিত বিরোধের নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এটি ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, এলাকার ব্যক্তিবর্গ এবং এনজিওর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কাজ করে। এটি অভিবাসী কর্মীদের অভিবাসন-সম্পর্কিত অভিযোগগুলির স্বল্প খরচে দ্রুত সমাধান করার জন্য বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায় সমাধান করা অভিযোগগুলির মধ্যে সাব-এজেন্টদের দ্বারা প্রতারিত হওয়া, বিদেশে পাঠানোর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নেওয়া, পাসপোর্ট-ভিসা বা অন্যান্য কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা, উচ্চ বেতনের প্রতারণামূলক প্রতিশ্রুতি বা অন্য কিছু সম্পর্কিত মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে প্ররোচিত করা, আত্মীয়দের মধ্যে মাইগ্রেশন-সম্পর্কিত চুক্তি সংক্রান্ত কোনও লেনদেনের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে উদ্ভূত বিরোধমূলক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে। যখন আদালতে দাবি প্রমাণ করার মত পর্যাপ্ত দালিলিক প্রমাণাদি ভুক্তভোগীদের হাতে থাকে না তখন এই জিএমসি প্রক্রিয়াটি প্রতারিতদের সাহায্য করে থাকে।
গবেষণাটি সরকারের প্রাসঙ্গিক আইন ও নীতিমালার পর্যালোচনার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এ গবেষণায় প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক আইনি বিধানও পর্যালোচনা করা হয়েছে। জিএমসি মডেলকে বিদ্যমান আইনি সহায়তা কাঠামো অথবা গ্রাম আদালতের কাঠামোর সাথে সমন্বিত করার বিষয়টি গবেষণার উপস্থাপন করা হয়েছে। গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, জিএমসি এর মতো একটি মডেল বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত বিকেন্দ্রীকরণের নীতিতেও অবদান রাখতে পারে এবং সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৭৩-১৯৭৮) থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন নীতিমালা বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
উক্ত অনুষ্ঠানের বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী (কো-চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ পার্লামেন্টারিয়ানস ককাস অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দুঃখ প্রকাশ করেন যে, দেশের অর্থনীতিতে অভিবাসীদের বিরাট অবদান থাকা সত্ত্বেও আমরা এখন পর্যন্ত অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য যথা উপযুক্ত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি। তিনি অভিমত পোষণ করেন, যেখানে ন্যায় বিচারপ্রার্থী অভিবাসীদের কাছে তাদের নিজেদের সমর্থনে পর্যাপ্ত নথিপত্র থাকে না, সেখানে জিএমসি মডেল বিরোধগুলি সমাধান করার একটি ভাল উপায় হতে পারে।
সিমস প্রকল্পের পরিচালক মো. আবুল বাসার অভিবাসী বিচারপ্রার্থীদের অভিযোগের সমাধানের একটি টেকসই উপায় বিকাশের ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, আইনজীবী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।