সেই রাতের বর্ণনা দিলেন নিহত নর্থ সাউথ শিক্ষার্থীর বন্ধু
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৬ AM , আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৯ AM
ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ার খাগান এলাকার একটি ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবির মাশরুর ডায়মন্ডের (২৫) মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এটিকে হত্যা বললেও পুলিশ বলছে আত্মহত্যা।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সাভারের বিরুলিয়ার খাগান এলাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন আবদুল জলিলের ভাড়া বাড়ির কাছে আবিরের মরদেহ পাওয়া যায়। একটি ভবনের পাঁচতলা থেকে নিচে পড়ে আবিরের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত আবিরের বাল্যবন্ধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম ফয়সাল গণমাধ্যমকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, রাত ১টা ৫ মিনিটে আবির যখন ফ্ল্যাট থেকে বের হন, তখন তাঁর চেহারায় আতঙ্কের ছাপ ছিল। আবির যখন গেটের কাছে যান, তখন পেছনে ওই ফ্ল্যাটের ফাহমিদুলকে দেখা যায়। আবির সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় ফাহমিদুল তাঁকে থামানোর চেষ্টা করে। পরে ফাহমিদুল ফ্ল্যাটের দরজার সামনে গিয়ে কিছু একটা বললে ভেতর থেকে দুজন বের হয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠেন। এরপর ফুয়াদ ওপরে উঠে ১০-১২ সেকেন্ডের মধ্যে মাথায় হাত দিয়ে নিচে নেমে আসেন।
জানতে চাইলে ফাহমিদুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবির ভাই আমাদের বাসায় আসেন। সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে গল্প করেন। এরপর ভাই (আবির) পাশের কক্ষে একা একা কিছুক্ষণ থাকেন। একসময় ভাই বের হয়ে কারও কাছে ব্যালেন্স (ফ্লেক্সিলোড) হবে কি না, জানতে চান। বন্ধু তালহার মাধ্যমে ৫০ টাকা ব্যালেন্স দিই ভাইয়ের নম্বরে। এরপর আবার পাশের কক্ষে গিয়ে তিনি কথা বলেন। এরপর তিনি বাসার বাইরে যেতে চান। আমিও পেছনে পেছনে যাই। গেট বন্ধ থাকায় দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে ছাদে যান আবির ভাই। আমি থামানোর চেষ্টা করি। পরে ফ্ল্যাটের অন্যদের ডাকি। তিনি ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।’
তবে আবিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা বলছেন, এত রাতে আবির নিচে যাওয়ার চেষ্টা করবেন কেন? তাছাড়া নিচে নামার সময় আবিরের চেহারা আতঙ্কের ছাপ দেখা গেছে। কেউ তাকে ভয় দেখিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিতে পারে।
এ বিষয়ে আবিরের খালা শিক্ষিকা কুইন মন্ডল জানান, ডায়মন্ডকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এজন্যই ওই মেসের তিন শিক্ষার্থী আত্মগোপনে রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের জোরালো কোনো ভূমিকা নেই। অপরাধীরা প্রভাবশালীর সন্তান হওয়ায় এ মামলায় অগ্রগতি হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. দিদার হোসেন বলেন, অপমৃত্যুর অভিযোগে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আর এ মামলার তদন্ত করে যদি অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাহলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপমৃত্যুর মামলাটি সাতদিনেও আদালতে প্রেরণ না করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।