হোচিমিন কাণ্ডে বিব্রত ইউজিসি, নর্থ সাউথকে শোকজ

হোচিমিন ইসলাম, ইউজিসি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির লোগো
হোচিমিন ইসলাম, ইউজিসি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির লোগো  © ফাইল ছবি

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার অ্যান্ড প্লেসমেন্ট সেন্টারের (সিপিসি) উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ট্রান্সজেন্ডার হোচিমিন ইসলামের যোগ দিতে না পারার ঘটনায় বিব্রত বোধ করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এই ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসি বলছে, কেবল ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েও তাকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। যা বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শুভকর নয়।

এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘হোচিমিন ইসলামের ঘটনাটি ‍দুঃখজনক। এ বিষয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ করা হয়েছে। গতকাল রোববার চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাদের জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী উইমেন্স ক্যারিয়ার কার্নিভাল শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিরোস ফর অল (এইচএফএ) ও আই-সোশ্যাল। নেটওয়ার্কিং, লার্নিং এবং পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে লক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে চারজন নারী অধিকার কর্মীকে আলোচক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এদের মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার হোচিমিন ইসলাম ছাড়াও ছিলেন ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্সের জেন্ডার ইনক্লুশন অ্যান্ড উইমেন অন্ট্রপ্রোনারশিপ ইউনিটের সিনিয়র ম্যানেজার কাশফি বিনতে আহমেদ, আজিমুর রোকিয়া রহমান ট্রাস্টের ফাইজা রহমান ও উদ্যোক্তা জেরিন মাহমুদ হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা যায়, এ অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ট্রান্সজেন্ডার হোচিমিন ইসলামের আমন্ত্রণের বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে না আনার বিষয়ে মতামত জানান। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ হোচিমিনের বিপক্ষে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। পরে তাদের দাবির মুখে হোচিমিনের সেশন বাতিল হয়ে যায়।

তবে এ অনুষ্ঠানে হোচিমিন ইসলামকে নিয়ে আসার সব চেষ্টাই করেছেন আয়োজকরা। হোচিমিন জানান, শুরু থেকে অর্গানাইজারদের সাথে নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষ আমাকে নিষিদ্ধ করতে চায়। আর অর্গানাইজাররা যেকোনো মূল্যে আমাকে ইভেন্টে রাখতে চায়। একটা সময় আমি বুঝতে পারি আয়োজকরাও চাপের মধ্যে রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে আমার আর যাওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমি এ ধরনের মার্জিনালাইজড মানুষগুলোকে নিয়ে কাজ করার জন্য দেশে ফিরে এসেছিলাম। এখানে আমি কোনোদিন কোনো ধর্মকে অবজ্ঞা করিনি। ধর্মকে কটূক্তি করিনি। আমার জন্মও একটা মুসলিম পরিবারে। আমাদের পরিবারের মানুষরাও ধার্মিক।

এ অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হোচিমিন বলেন, এ দেশের মানুষরা এরকমই। এদেশের মানুষের আচার-আচরণ, কথাবার্তা এরকমই। এটা আমি বুঝে গেছি। দেশটা যখন স্বাধীন হয়, যিনি স্বাধীন করেছেন তাকেই মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর তো আর এ জাতিকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

এ বিষয়ে জানতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence