সবার জন্য উপযুক্ত চাকরি নিশ্চিতকরণে কাজ করছে সরকার: গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

  © ফাইল ফটো

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে প্রাথমিক থেকে শুরু করে কারিগরি শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ ও গুণগত মান উন্নয়ন করা। আর এর মাধ্যমে সবার জন্য যথাযথ চাকরি এবং উপযুক্ত কাজ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) কক্সবাজারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) ফেইজ-২ প্রকল্পের প্রি-ভোকেশনাল ট্রেনিং কার্যক্রমের সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৭ ভাগ কারিগরী দক্ষতা সম্পন্ন। বর্তমান সরকার আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এ সংখ্যাকে ২০ ভাগ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ ভাগে উন্নীত করতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ সরকারের এ লক্ষ্য পূরণে সহায়ক ভুমিকা পালন করছে রিচিং আউট-অব -স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্প। যুব জনগোষ্ঠিকে দক্ষতা প্রদান, চাকুরির সুযোগ তৈরি এবং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে এ রস্ক প্রকল্প। এ কর্মসূচির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ বিশেষায়িত সংস্থা হিসেবে কারিগরী সহায়তা প্রদান করছে। 

তিনি বলেন, রস্ক প্রকল্প ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান যারা প্রাথমিক শিক্ষা চক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি, সেসব শিশুদের জন্য শিক্ষার দ্বিতীয় সুযোগ তৈরি করেছে। এ প্রকল্প বাংলাদেশের ১৪৮টি উপজেলায় আনন্দ স্কুল কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় ৬ লক্ষ ৯০ হাজার শিক্ষার্থীদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি ১০টি সিটি কর্পোরেশন এলাকায়, ৮-১৪ বছর বয়সী ঝড়ে পড়া ৫০ হাজার শিক্ষার্থীদেরকে ৩ বছর মেয়াদী এক্সিলারেটেড এডুকেশন মডেলের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। রস্ক প্রকল্পের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে প্রি-ভোকেশনাল স্কিল প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পরে যারা পরবর্তী শিক্ষাক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেনি এবং যাদের বয়স ১৫-২৪ বছর তাদের বৃত্তিমূলক দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করা এবং তাদের চাকরি পেতে কিংবা উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে সহায়তা করা। 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়ণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধ পরিকর। সরকার প্রতিবছর সারাদেশে বছরের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। ঝরে পড়া রোধ করার জন্য দেওয়া হচ্ছে উপবৃত্তি, শিক্ষক সহ বিদ্যালয়সমূহ জাতীয়করণ, এ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্য সর্বত্র প্রশংসিত এবং দৃশ্যমান। গত ১০ বছরে শিক্ষাখাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার প্রায় শতভাগে উন্নীত হয়েছে, ঝরে পড়া কমেছে অনেকাংশেই। বিনামূল্যের বই বিতরণ, উপবৃত্তি প্রদান, মিড ডে মিলসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের সুফল মিলছে এখন। শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে।শিক্ষকদের দক্ষতা ও পেশাগত উন্নয়নেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গৃহীত ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সোহেল আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পন্ডিত, রস্ক ফেইজ-২ প্রকল্পের পরিচালক মোঃ মাহবুব হাসান শাহীন এবং সেভ দ্য চিলড্রেন ,বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর-প্রোগ্রাম অপারেশন্স বন্দনা রিসাল। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।


সর্বশেষ সংবাদ