ছাত্র ইউনিয়ন
দুই নেতাকে হয়রানির প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১৯ PM , আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১৯ PM
রাজধানীর বেইলি রোডে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আাঁকার সময় ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতাকে ধরে থানায় নিয়ে দিনভর আটকে রেখে ‘হয়রানির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন থেকে একটি মশাল মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশ থেকে বক্তারা ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতাকে আটক ও নিপীড়নের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় আগামী ৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। এছাড়া আগামী সাত দিন দেশব্যাপী ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্র ইউনিয়ন।
বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদি হাসান নোবেল বলেন, আজকে বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলের মতো ধর্ষণ-নিপীড়ন চলছে। আমরা দেখি পাহাড় থেকে সমতল, মাদরাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস থেকে বাসা প্রত্যেকটি জায়গায় আজ নারীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। বর্তমান সময়ে ধর্ষণ করোনাভাইরাসের চেয়ে মহামারী রূপ ধারণ করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা লাগাতার আন্দোলন করছি।
তিনি বলেন, এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমাদের ঢাকা মহানগরের সহযোদ্ধারা যখন ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমানে গ্রাফিতি আঁকতে গিয়েছিলেন, সেখানে পলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেছে। এতে এটা স্পষ্ট, ধর্ষণের সঙ্গে ক্ষমতার কাঠামোর সম্পর্ক আছে। ক্ষমতার সাথে যারা জড়িত, তারাই বার বার এই সাহস দেখায়।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি জহরলাল রায় বলেন, আমার যখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে গ্রাফিতি এঁকে শৈল্পিক প্রতিবাদ জানাতে যাই তখন রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা আমাদের নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। আমরা দেখছি রাষ্ট্র এখন ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষক। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর প্রশাসন খড়গহস্ত। আমরা ধর্ষক ও ধর্ষকের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, বিগত এক মাসে সারা দেশে ৩৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ধর্ষণের সাথে জড়িতদের কয়জনের বিচার হয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। আমরা দেখছি, কুমিল্লার তনু হত্যা থেকে শুরু করে আদিবাসী নারী ধর্ষণের কোনো বিচার হয়নি। আাজকে সারা দেশে ক্ষমতার বিকৃত চর্চা শুরু হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনছে।
সমাবেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার, ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাদাত মাহমুদসহ ছাত্র ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দেওয়ালে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আাঁকার সময় ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি জহরলাল রায় এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাদাত মাহমুদকে আটক করে রমনা থানা পুলিশ।
পরে মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের অভিযোগ, এ সময় পুলিশি নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছিলেন তাদের সহযোদ্ধারা।