জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটে ‘না’ জিতলে কী হবে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫২ PM , আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৪ PM
‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এবার উঠেছে গণভোটের প্রস্তাব। প্রস্তাবটি ঘিরে মূল বিতর্ক এখন গণভোট কবে হবে তা নিয়ে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামাল তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই প্রসঙ্গে একটি মন্তব্য পোস্ট করেন, যা ইতিমধ্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মাসুদ কামাল তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটের প্রস্তাব উঠেছে। সবাই রাজি গণভোটে। বিরোধ এখন—গণভোট কবে হবে সেটা নিয়ে।’
তিনি জানান, বিএনপিসহ কয়েকটি দল চায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপি ও কয়েকটি ছোট দল চাইছে নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে গণভোট আয়োজন করা হোক।
তবে মাসুদ কামাল মনে করেন, আলোচনাগুলোয় একটি বিষয় স্পষ্ট। সব পক্ষই ধরে নিয়েছে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হবে, অর্থাৎ জনগণ জুলাই সনদের পক্ষে রায় দেবে। কিন্তু তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আসলেই কি তাই?’
তার বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, বিএনপি শুরুতে গণভোটে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। তাদের প্রস্তাব ছিল নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের মাধ্যমে জুলাই সনদের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা। কিন্তু জামায়াত ও এনসিপিসহ অন্য দলগুলো বিএনপিকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেনি।
সেখানেই তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক জটিলতা। মাসুদ কামালের আশঙ্কা, ভোটের সময় বিএনপির ভোটাররা সেই অবিশ্বাস ভুলবে না—বরং বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তার সঙ্গে যদি আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যবাহী ভোটাররা যুক্ত হয়, তাহলে ‘না’ ভোটের জয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তিনি লেখেন, ‘সবমিলিয়ে গণভোটে যদি ‘না’ জিতে যায়, তাহলে? তাহলে তো পুরো সংস্কার কার্যক্রমই ভেস্তে যাবে!’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জুলাই সনদ এখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বিতর্কিত নীতিগত ইস্যু। এর আওতায় প্রস্তাব করা হয়েছে সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন কমিশনের কাঠামো পরিবর্তন, প্রশাসনে বিকেন্দ্রীকরণ এবং শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন নীতি প্রণয়নের মতো বড় সংস্কার।
তবে এসব সংস্কারের বাস্তবায়ন ‘গণসমর্থন’ ছাড়া সম্ভব নয় বলেই অন্তর্বর্তী সরকার সূত্র জানায়। সেই কারণেই গণভোটের প্রস্তাব উঠেছে। কিন্তু তারিখ, প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বিভক্তি থাকায় বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত।