দুইদিন না যেতেই হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার বিএনপি নেতার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ০৮:৩২ PM , আপডেট: ২২ মে ২০২৫, ০১:৩০ AM

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ ও ‘ভোট চুরির’ নির্বাচন আখ্যা দিয়ে দায়ের করা মামলাটি মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রত্যাহার করেছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুল ইসলাম। আজ বুধবার (২১ মে) সকালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা আমলি আদালতে মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন তিনি। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন জেলা আদালতের পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান।
এর আগে গত ১৯ মে (সোমবার) দায়ের করা এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিইসি, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ মোট ১৯৩ জনকে আসামি করা হয়। বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ভূঞাপুর থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৩ আগস্ট ধার্য করেন।
তবে পরদিন ২০ মে (মঙ্গলবার) মামলার মধ্যে থাকা পাঁচজন স্থানীয় সাংবাদিকের নাম বাদ দেওয়ার জন্য বাদী কামরুল ইসলাম আদালতে অনাপত্তিপত্র দাখিল করেন। এরপর বুধবার (২১ মে) তিনি মামলাটি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের আবেদন করেন, যা আদালত গ্রহণ করে নথিজাত করার আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: কাল ৭ ঘণ্টা শাহবাগ-ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করবে ছাত্রদল
সূত্রে জানা গেছে, মামলাটি দায়ের ও পরবর্তীতে প্রত্যাহারের পেছনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ নানা নাটকীয়তা ও গোপন বৈঠকের প্রভাব রয়েছে। ভূঞাপুরের একাধিক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনের ১১ নম্বর সেক্টরের এক নেতার বাসায় মঙ্গলবার দুপুর ও বিকালে মামলাটি নিয়ে দুই দফা বৈঠক হয়। একই রাতে ভূঞাপুরের ভারই গ্রামে উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতার বাসায় আরেকটি বৈঠকের মাধ্যমে মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। যদিও বাদী কামরুল ইসলাম এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গেছে।
বাদী কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, মামলাটি প্রত্যাহার করতে তাকে নির্দেশ দেন ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা। সিদ্ধান্তটি বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি সেদিন ঢাকা ছিলেন এবং মামলাটি প্রত্যাহারের কথা শুনেছেন মাত্র। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক না হওয়ায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু বলেননি।
আরও পড়ুন: টিসিবি’র তেলে লিটারে ৩৫ টাকার মূল্যবৃদ্ধি
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল জানান, মামলা দায়ের বা প্রত্যাহারের বিষয়ে জেলা বিএনপিকে কিছুই জানানো হয়নি। তাই ঘটনাটি তদন্তে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর বিএনপির হাইকমান্ডের সঙ্গে পরামর্শ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনও মামলাটি দায়েরের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মনে করেন, এ ধরনের মামলায় অনেক সময় বাদী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ‘মামলা বাণিজ্যের’ প্রবণতা দেখা যায়। তবে মামলাটি প্রত্যাহার করায় তিনি বাদীকে স্বাগত জানান এবং দলীয়ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন।