১০০ দিন ৯ ঘণ্টা ঘুমিয়ে ৬ লাখ টাকা জিতলেন ত্রিপর্ণা

 ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী
ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী  © সংগৃহীত

ছোটবেলা থেকেই ঘুমাতে ভীষণ ভালোবাসেন ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী। ঘুমই তাঁর প্রাণের বন্ধু। ঘুম ছাড়া আর কিছু যেন ভাবতেই পারতেন না। এই নিয়ে লোকজনের খোঁটাও সহ্য করতে হয়েছে অনেক। কিন্তু তাঁর এই ঘুমই যে তাঁকে স্বীকৃতি এনে দেবে, তা কী আর কেউ জানত। এই ঘুমের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শ্রীরামপুরের ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী জিতে নিয়েছেন পাঁচ লাখ ভারতীয় রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ লাখ টাকা। 

ভারতের ইন্ডিয়া টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, একটি ম্যা-ট্রেস সংস্থার তরফে এই ঘুমের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এমবিএ করতে গিয়ে এই প্রতিযোগিতার কথা জানতে পেরেছিলেন ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী। 

তিনি বলেন, ‘যখন আবেদন করেছিলাম তখন বুঝতে পারিনি এটা প্রতিযোগিতা। ইন্টার্নশিপের মতো ছিল বিষয়টা। পরে গিয়ে দেখি ঘুমানোর জন্য পয়সাও দেওয়া হবে।’

আয়োজক সংস্থা জানিয়েছে, একাধিক রাউন্ড ছিল। ইন্টারভিউ হয়েছে। সেখানে ঘুমকে কে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সেই বিষয়টা দেখা হয়েছে। সাড়ে পাঁচ লাখ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে ১৫ জনকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের ১০০ দিন ৯ ঘণ্টা করে ঘুমোতে বলা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল একটি ম্যা-ট্রেস ও স্লিপ ট্র্যাকর। সেখান থেকে ফাইনালের জন্য চারজনকে বেছে নেওয়া হয়। আর সেই চারজনের মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছিলেন ত্রিপর্ণা।

তবে এই প্রতিযোগিতার জন্য জোর করে ত্রিপর্ণাকে ঘুমোতে হয়নি। এই ঘুমের জন্যই এক সময় চক্রবর্তী বাড়ির সকালটা শুরু হতো চিৎকার চেঁচামেচি দিয়ে। ঘুমের জন্য মায়ের বকা তো খেতেই হত ত্রিপর্ণাকে। এমনকি স্কুল কলেজেও ঘুমিয়ে যেতেন তিনি।

ত্রিপর্ণা বলেন, ‘একবার অঙ্ক পরীক্ষা দিতে গিয়ে হলেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভাঙে ৪০ মিনিট পরে। স্ট্যাট পরীক্ষা দিতে গিয়েও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরীক্ষক ডেকে চা খাইয়েছিলেন।’

ঘুমের জন্যই ছোটবেলায় প্রতিদিন স্কুলের বাস মিস করাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল ত্রিপর্ণার। যেখানে সেখানে গভীর ঘুমে ডুবে যেতে পারার অভ্যাসটা তার ছিল ছোটবেলা থেকেই। একবার তো কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছিলেন এক ঘুমে!

আরও পড়ুন: ‘অন্য দেশ যখন পয়সা গুনছে, আমরা গুনছি মরদেহ’

যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়াটা যে ভালো বিষয় নয় সেটা এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে বুঝেছেন ত্রিপর্ণা। প্রথম ১০০টা দিন যে তার সমস্যা হয়নি এমনটা নয়। কারণ রাতে অফিস থাকত বলে তাকে ঘুমাতে হতো দিনের বেলায়। অন্য প্রতিযোগীরা যেখানে ঘুমাতেন রাতেই। আর কথায় আছে দিনে যতই কেউ ঘুমাক রাতের ঘুম রাতের ঘুমই। তাই সেটা ম্যানেজ করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানিয়েছেন ত্রিপর্ণা। 

তার কথায়, ‘আমি গর্বিত। কারণ মুম্বাইয়ের বাসিন্দারা যখন বলে তারা রাতে ঘুমান না, চেন্নাইয়ের বাসিন্দারা বলেন তারা নাকি একমাত্র মৃত্যুতেই ঘুমান তখন বাঙালির ঘুম নিয়ে দুর্নাম রয়েছে। কিন্তু এই ঘুম দিয়েই বাঙালিদের গর্বিত করতে পেরেছি।’


সর্বশেষ সংবাদ