ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোক বই তৈরি বাংলাদেশের তরুণদের
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:২১ PM , আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৪ PM
ফিলিস্তিনের নির্যাতিত শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও প্রতিবাদের এক অভিনব মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তরুণরা। “মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার” নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যতিক্রমী আয়োজনে তৈরি হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোক বই, যাতে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১২,০০০-এর বেশি মানুষ স্বহস্তে লিখেছেন তাদের শোক, সহানুভূতি ও প্রতিবাদের ভাষা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ৩,০০০ পাতার এই বিশাল শোক বইটি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এদিন প্রদর্শনীর পাশাপাশি দর্শনার্থীদের কাছ থেকেও নতুন শোক বার্তা সংগ্রহ করা হয়।
মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার, জবি শাখার সমন্বয়কারী ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার দীর্ঘদিন ধরে দেশের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও নৈতিক গাইডেন্স দিয়ে আসছে। তাদের মতে, একটি নৈতিক সমাজ গঠনে প্রতিটি মানবিক কণ্ঠই গুরুত্বপূর্ণ। গাজার চলমান নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মের এক নীরব অথচ শক্তিশালী অবস্থান হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা সংগঠনের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা (মোরাল চাইল্ড ও ভলান্টিয়ার) সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষদের কাছ থেকে নিজ হাতে লেখা শোক মন্তব্য, অনুভূতি ও প্রার্থনা সংগ্রহ করেছেন। অংশগ্রহণকারীরা নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষরসহ নিজেদের ভাবনা ব্যক্ত করেছেন।’
রাব্বি জানান, এই শোক বইটি শুধু একটি প্রতিবাদ নয়, বরং তা হতে পারে একটি ঐতিহাসিক রেকর্ড এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক মানবিক স্মারক। সংগঠনটি জানিয়েছে, অচিরেই তারা ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোক বই’ হিসেবে এই উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিতে গ্রিনিচ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ আবেদন করবে। পরে শোক বইটি সংরক্ষণের জন্য ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরিতে জমা দেওয়া হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ফিলিস্তিন এখন শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি হাজারো নিষ্পাপ শিশুর কান্না, মায়েদের শোক আর মানবতার ক্ষত-বিক্ষত চিত্র। আজ সময় এসেছে বিশ্ববাসীর বিবেক জাগ্রত করার। নিরপরাধ মানুষের উপর নিপীড়ন নয়, দরকার সহমর্মিতা, দরকার তাদের পাশে দাঁড়ানোর। ফিলিস্তিন আর এখন আর্তনাদ নয়, বরং তা হোক মানবতার জয়ের প্রতীক।’
মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার জানিয়েছে, তারা হিংসা বা সংঘর্ষে বিশ্বাস করে না। এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, মানবিক ও নৈতিক যা বিশ্বের বিবেককে জাগিয়ে তোলার এক বিনয়ী প্রয়াস।