কপাল পুড়বে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের

এইচএসসি পরীক্ষার্থী
এইচএসসি পরীক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

শিক্ষার জন্য বড় ধাক্কাটা আজ এলো। করোনার এই দুঃসময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত অনাকাংক্ষিত। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত হাজার হাজার ছেলে-মেয়ের কপাল পুড়বে। যার প্রভাব পড়বে তাদের উচ্চশিক্ষায়।

আমার নিজের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, ১৫ বছর আগে এসএসসিতে আমি এ গ্রেড পেয়েছিলাম, কিন্তু এইচএসসিতে পেয়েছিলাম জিপিএ-৫।

যেসব ছেলে-মেয়ে জেএসসি কিংবা এসএসসিতে ভাল ছিল, তার একটি বড় অংশ এইচএসসিতে এসে ভাল ফলাফল করতে পারে না। মূলত আগের পরীক্ষাগুলোতে ভাল ফল থাকায় অনেকে আত্ম অহমিকায় ভোগে যার ফলে অনেকে এইচএসসিতে এসে ভাল পড়াশুনা করে না।

অপরদিকে, যারা এসএসসি কিংবা জেএসসিতে ফলাফল নিচের দিকে ছিল তাদের চেষ্টা থাকে এইচএসসিতে এসে ভাল কিছু করার। অনেকের বোধগম্যতারও পরিপক্কতা আসে। ফলে এসএসসিতে যারা জিপিএ-৫ পায়, তাদের একটি অংশ জিপিএ-৫ পায় না।

যারা ভাল ফলাফলের আশায় রাত-দিন পরিশ্রম করে এইচএসসির পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিল, তাদের কাছে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কখনো মেনে নেয়ার মত নয়। পূর্বের পরীক্ষার মূল্যায়ন দেখে বর্তমান পরীক্ষার মূল্যায়ন করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।

যেসব ছেলে-মেয়ে এসএসসির সময় পড়াশুনার যে সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে, এইচএসসির সময় তা নাও পেতে পারে। পরিবেশ মানুষকে শিখায়। পরিস্থিতি মানুষকে শক্তিশালী করে তোলে।

যে ছেলেটা জেএসসিও এসএসসিতে জিপিএ-৪ পেল, সেই ছেলেকে আপনারা গড় করে এইচএসসি ৪ দিয়ে দিবেন, তা কখনো সুখকর নয়, যা তার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য অন্তরায় হতে পারে বরং সেই ছেলে ৪ না পেয়ে ৫ পেতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন যোগ্যতায় এগিয়ে থাকতে পারে। শিক্ষার্থীরা ০.০২৫ পয়েন্ট ব্যবধানে যেখানে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এসএসসি ও এইচএসসি ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত জিপিএভিত্তিক পয়েন্টের এমন ফাঁরাক তাকে বহুদূর পিছিয়ে দেবে।

আমরা জানি না, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভাবনায় আর কোন অপশন ছিল কী না, তবে বিকল্প যদি ভাবতে হয়, তাহলে অন্তত এইচএসসির বার্ষিক ও টেস্ট পরীক্ষার মূল্যায়নের বিষয়টি মাথায় রাখতে পারতেন। আমরা বারবার বলে আসছি, এইচএসসি পরীক্ষা জীবনের বাঁক পরিবর্তন করে দেয়। সেই পরীক্ষা ডাবল শিফটে সময় নিয়ে করা যেত। বিষয় কমিয়ে নেয়া যেত।

সেটা না করে, এমন সিদ্ধান্ত কখনোই কাম্য নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত, এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করা।

লেখক: পোস্ট ডক্টরেট রিসার্চ এসোসিয়েট, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান


সর্বশেষ সংবাদ