চলমান পরিস্থিতি, শিক্ষার্থীদের কথা ভাবছি
- বদরুল আলম
- প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৯ AM , আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:০৭ AM
আমাদের কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আগেই সমাপ্ত হয়েছে। অধিকাংশ কলেজেও তাই। কিন্তু প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কথা যদি ভাবি। দেখেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এখন শিক্ষাবর্ষের শেষ সময় চলছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোথাও আবার শেষ সময়ের ক্লাস চলছে। কিন্তু হরতাল-অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই দুই স্তরে পড়ুয়া প্রায় তিন কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা নিয়ে এক ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ভয় নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিশেষ করে যানবাহনে আগুন দেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ভয় বাড়ছে।
সিলেটের কথা যদি বলি, সাধারণ দিনের তুলনায় বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধের প্রভাব পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে। শহরতলির তুলনায় শহরের বিদ্যালয়গুলোতে এর প্রভাব দেখা গেছে বেশি। তবে বেশি প্রভাব ফেলেছে প্রাথমিক পর্যায়ে। খবরের কাগজে দেখলাম, সিলেট নগরের জিন্দাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকে (শিশুশ্রেণি) মোট শিক্ষার্থী ২৭ জন। তাদের মধ্যে গতকাল উপস্থিত ছিল ১০ জন। অথচ হরতাল-অবরোধের আগে গত ১৬ অক্টোবর এই ক্লাসে উপস্থিত ছিল ২০ জন। ওই বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রের চাচা শাকিল আহমদ বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় ভাতিজাকে তিনি বিদ্যালয়ে দিয়ে যান। কিন্তু বার্ষিক পরীক্ষার সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলে মুশকিল হবে।
দেশ এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া লেগেছে সবখানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছে দেশ। একটি সুখী-সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন সবাই দেখে। তরুণ প্রজন্মের অনেককে এখন গাইতে দেখি, ‘বাংলা আমার তৃষ্ণার জল, তৃপ্ত শেষ চুমুক/ আমি একবার দেখি, বারবার দেখি, দেখি বাংলার মুখ।’ স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট জেনারেশন তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীর কথা ভাবা এখন সময়ের দাবি।
প্লিজ শিক্ষার্থীদের, শিশুদের স্ট্রেস দিবেন না। তাদের সহযোগিতা করুন। বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ প্রথম আলোকে একটা পরামর্শ দিয়েছেন, এই অশান্ত পরিস্থিতিতে কমবেশি সবাই দুরবস্থার মধ্যে আছে। পরীক্ষা ঘিরে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ না দিয়ে মূল বিষয়ে সংক্ষেপ করে পরীক্ষা নেওয়া যায়, যাতে তিন-চার দিনে শেষ করা যায়। শিক্ষক শিক্ষার্থী আমাদের দেশের সম্পদ। তাঁদের কথা ভাবুন।
লেখক: গবেষক ও প্রভাষক, তাজপুর ডিগ্রি কলেজ, সিলেট।