৩৫ ঊর্ধ্বদের আবেদনের সুযোগ নিয়ে যা বললেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান

আমিনুল ইসলাম ও এনটিআরসিএ লোগো
আমিনুল ইসলাম ও এনটিআরসিএ লোগো  © ফাইল ছবি

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েও বয়স সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারেননি অনেক নিবন্ধনধারীর। সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে রিট করেন প্রার্থীরা। আদালত এ বিষয়ে রুল জারি করলেও আবেদনের সুযোগ নিয়ে শঙ্কা কাটেনি ভুক্তভোগীদের।

১৮তম নিবন্ধনের ৩৫ ঊর্ধ্বদের রিট এবং আবেদনের সুযোগ প্রসেঙ্গ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস কথা বলেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ‘আদালতের রুলের জবাব আইনিভাবে দেওয়া হবে। জবাব দেওয়ার পরও যদি আদালত মনে করেন, প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া দরকার, তাহলে আমরা তাদের আবেদনের সুযোগ দেব। আদালতের নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন সার্কুলার প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর। দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে পরীক্ষার প্রতিটি ধাপ শেষে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২৫ সালের ৪ জুন। এত দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়ার কারণে অনেকের বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম হয়ে যায়। ফলে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে তারা আবেদন করতে পারেননি অনেক প্রার্থী।

ভুক্তভোগী চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, সরকারিসহ যেকোনো চাকরির পরীক্ষায় প্রার্থীদের বয়স গণনা করা হয় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে। অথচ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বয়স নির্ধারণ করছে ফলাফল  প্রকাশের তারিখ অনুযায়ী। এর ফলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েও দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পূর্ববর্তী গণবিজ্ঞপ্তিগুলোতে বয়সে ছাড় দেওয়া হলেও এবার সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ও ভালো নম্বর থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙেছে গেছে কয়েকশ প্রার্থীর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী সায়মা বলেন, সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক আইসিটি পদে ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। ছোটবেলা থেকে প্রবল ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হওয়ার। সেই আকাঙ্খা থেকেই নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদন করেছিলাম। তবে এনটিআরসিএর বিধির মারপ্যাঁচে আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে বয়স গণনা করা হলেও এনটিআরসিএর ক্ষেত্রে ভিন্ন নিয়ম। আইসিটি বিষয়ে সাড়ে সাত হাজারের বেশি পদ ফাঁকা রয়েছে। অথচ যোগ্যতা থাকলেও আমাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। 

সায়মা বলেন, ‘বিগত গণবিজ্ঞপ্তিগুলোতে ব্যাকডেট দেওয়া হলেও ১৮তম নিবন্ধনধারীদের জন্য প্রকাশিত ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে কোনো ব্যাকডেট দেওয়া হয়নি। আমাদের ভাইভা নিতে প্রায় নয় মাস লেগেছে। আমরা সার্টিফিকেট অর্জন করেছি তিনটা ধাপ অতিক্রম করে, অথচ একটি বারও আবেদন করতে পারলাম না। করোনাভাইরাসের জন্য যাদের পরীক্ষা নিতে দেরি হয়েছে বা সার্কুলার হতে দেরি হয়েছে তারাই বঞ্চিত। আমরা একটাও গণবিজ্ঞপ্তি পেলাম না, আমরা শুধু আবেদনের সুযোগ চাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুর রহমান বলেন, ‘আমার সনদের মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও বয়স ৩৫ উর্দ্ধ হওয়ায় এনটিআরসিএ আমাকে একবারের জন্যেও ৬ষ্ঠ গনবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ দেয়নি। কিন্তু বিগত সময়ে সবাই ব্যাকডেট পেয়েছে। তাছাড়া ৬ষ্ঠ গনবিজ্ঞপ্তিতে মাত্র ৪০ নম্বর পেয়েও অনেকেই চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। আমরা যারা ভালো নম্বর পেয়েছি, তারাই বাদ পড়ে গেছি। এটা আমাদের সাথে চরম জুলুম এবং বৈষম্য। এ বৈষম্য থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের বঞ্চিত সকলকে অন্তত একটি বারের জন্য হলেও আবেদন করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’


সর্বশেষ সংবাদ