সাক্ষরতার অগ্রগতি আশানরূপ নয় : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

সাক্ষরতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
সাক্ষরতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।  © সংগৃহীত

সাক্ষরতার ক্ষেত্রে অগ্রগতি আশানরূপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেছেন, শিক্ষা মানুষের অধিকার। ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সাক্ষরতা বিস্তারে এ সাফল্যের জন্য আমরা ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পেয়েছি। সাক্ষরতার ক্ষেত্রে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। 

আজ ৮ সেপ্টেম্বর (রবিবার) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মিলনায়তনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

উপদেষ্টা আরও বলেন, দক্ষতাভিত্তিক সাক্ষরতা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি একটি ভালো প্রকল্প। এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। যদি এতে আশানুরূপ ফলাফল হয়, তবে চেষ্টা থাকবে সেটিকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া। 

তিনি বলেন, আমরা শুধু মানুষকে সাক্ষর করে তুলতে চাই না, তাদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই; যেন সে কর্মজীবনে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, সাক্ষরতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাক্ষরতার মাধ্যমে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব চেঞ্জ হয়ে যায়। একজনকে সক্ষম করে তোলা মানে তার জ্ঞানের মাত্রাটা অবারিত হয়, অভিজ্ঞতাটা অবারিত হয়, প্রকাশটা অবারিত হয়। সাক্ষর মানুষ একটি জাতির জন্য সম্পদ। বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশের জনসংখ্যা সম্পদ হতে পারে যদি তাদেরকে স্বাক্ষর করে তুলতে পারি, দক্ষ করে তুলতে পারি। 

আরও পড়ুন : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্বে ডা. বিধান রঞ্জন রায়

উপদেষ্টা আরও বলেন, মানুষের মানুষ হয়ে ওঠে তার ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে। সভ্যতার অন্যতম আবিষ্কার ‘লিপি’ আবিষ্কার। ‘লিপি’ আবিষ্কার সভ্যতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং এ বিষয়টি মানুষকে আরেকটি স্তরে নিয়ে গেছে।

অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, আমরা অবৈতনিক শিক্ষা ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। শুধু অবৈতনিক শিক্ষা নয়; আমরা উপবৃত্তি দিচ্ছি, বইপত্র দিচ্ছি, স্কুলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা কোন কোন স্কুলে হচ্ছে; সেটিকে আরো বিস্তৃত করার চেষ্টা করছি। 

আরও পড়ুন : সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি

তিনি বলেন, ভাষা ছাড়া অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, শিশুরা মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারলে তাদের ডেভেলপ হতে সমস্যা হয়। আমরা শুধু দেশের নাগরিক না, আমরা এখন আন্তর্জাতিক নাগরিক। যোগাযোগ, যাতায়াত, অর্থনীতি, সবদিক দিয়ে বিশ্বটাই একটি একীভূত বিষয় হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক নাগরিক হয়ে উঠার জন্য আমাদের অন্য ভাষা চর্চা করা প্রয়োজন। আমাদের বাচ্চাদেরকে যদি বহু ভাষাভাষী করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারা দেশের জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি তাহলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, বাংলাদেশস্থ ইউনেস্কোর প্রতিনিধি সুসান ভাইজসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উপদেষ্টা বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২৪’ এর কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।

‘বহু ভাষায় শিক্ষার প্রসার: পারস্পরিক সমঝোতা ও শান্তির জন্য সাক্ষরতা’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আজ বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!