প্রেমের টানে গাজীপুরে মার্কিন তরুণ, গ্রহণ করলেন ইসলাম ধর্ম

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে গাজীপুরে বিয়ে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে গাজীপুরে বিয়ে  © সংগৃহীত

প্রেমের জন্য সবকিছুই তুচ্ছ করে সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন এক আমেরিকান যুবক। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে ছেড়েছেন ধর্মও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। একবছর ধরে মন দেওয়া-নেওয়ার পর সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করলেন প্রেমিকাকে।

মার্কিন ওই যুবকের নাম রাইয়ান কফম্যান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিশৌরি স্টেটের ক্যানসাস সিটির বাসিন্দা। আর প্রেমিকা গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেনের নাতনি ও মৃত সিকান্দার আলীর মেয়ে সাইদা ইসলাম (২৬)।

রাইয়ান যুক্তরাষ্ট্রে নিজ এলাকায় একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন। পড়াশোনা করেছেন মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত। তার মা-বাবা ছাড়াও এক বড় ভাই রয়েছেন। তারা সেখানে প্রত্যেকেই আলাদাভাবে বসবাস করেন।

কনের নানা মোশারফ হোসেন জানান, ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকান্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর মা ও তার ছোট বোনকে নিয়ে সাইদা গাজীপুরে নানা মোশারফ হোসেনের বাসায় চলে আসেন। সেখানেই এখন তারা বসবাস করছেন। সাইদা তার বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করে।

সাইদা জানান, ২০২১ সালের এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রথম পরিচয় রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে। তারা নিজেদের ফোন নম্বর ও ঠিকানা বিনিময় করেন। এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের মধ্যে। ফেসবুক ও ফোন নম্বরে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। এভাবে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেন। প্রায় একবছর তারা ফেসবুকেই চুটিয়ে প্রেম করেন। শেষে দুজন সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। রাইয়ান বিয়ে করার জন্য তার দেশেই খৃষ্টধর্ম ত্যাগ করে যথা নিয়মে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে এ বছরের ২৯ মে বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি। এদিনই দুইজনের সরাসরি প্রথম দেখা হয়। তারপর সেখান থেকে সাইদার সঙ্গে সোজা গাজীপুরে নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন তারা।

রাইয়ান এখন গাজীপুরে মোশারফ মাস্টারের বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গহনা ও কাপড়-চোপড়সহ মোবাইল ফোন কেনার জন্য রাইয়ান, সাইদার কাছে অর্থ পাঠান। রাইয়ান বাংলাদেশে আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্পন্ন করেন সাইদা।

এদিকে, সুদূর আমেরিকা থেকে এক যুবক গাজীপুর এসে স্থানীয় তরুণীকে বিয়ের খবরে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমান।

সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশিদের বিষয়ে অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে রাইয়ান বলেন, বাঙালিরা খুবই অতিথিপরায়ণ। আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি, আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। খাবার-দাবার ও যত্ন নেওয়ার বিষয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুবই ব্যস্ত হয়ে ওঠেন যা আমেরিকায় বিরল।

বিয়ের পর সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান রাইয়ান। তিনি জানান, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র (কে-ওয়ান) ও ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন। পরে সেখানেই তারা সংসার করবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence